নিউজস্বাধীন বাংলা : সাংসদ সেলিম ওসমান বলেছেন, গত সাত মাস ধরে একটি ফ্যাক্টরির বেতন দেওয়া হয় না। গত আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে বলে গিয়েছিলাম, প্যারাডাইসের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নাই! কেন মামলা থাকে না, কেন রাস্তা ঘাট বøক করে দাঁড়ানো হয়, কেন প্রেসক্লাবের সামনে প্লাকার্ড নিয়ে দাঁড়ানো হয়, কেন বড় বড় বক্তৃতা দেওয়া হয়? কিন্তু মামলা কেন করা হয় না! এই উত্তরটা কে দিবে?
বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আঞ্চলিক ক্রাইসিস প্রতিরোধ কমিটির সভায় বিকেএমইএ-এর সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ওই কথা বলেন তিনি।
সেলিম ওসমান বলেন, আমাদের পলাশ সাহেব ওইদিন নেতৃত্ব দিয়েছেন, মন্টু দা সেদিন ফোন করেছেন। বলেছি মামলা চেয়েছি। মামলা দেন। মামলা হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মালিককে ধরে আনবে না কী করবে, সেটা বোঝা যাবে। এটা তো সম্ভব না মামলা বিহীন সমাধান করা। সমাধান মানে কি, লাভবান হতে চাচ্ছি।
তিনি বলেন, আমাদের লিখিত দেন। এখন সময় আছে। কোথায় কোন কল-কারখানা, সেটা কোন ডিপার্টমেন্টে? লিখিত সাবমিট করেন। জেলা প্রশাসন আছে, পুলিশ প্রশাসন আছে তারা দেখবে। কিন্ত এ ছাড়া যদি আমরা বলতেই থাকি। গল্প করতেই থাকি। তবে, শুধু আমাদের সময়টা নষ্ট হবে।
সেলিম ওসমান বলেন, গত ঈদের আগে বলেছি, নারায়ণগঞ্জে দুইটা বিল্ডিং আছে। যদি ওখানে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তাহলে নারায়ণগঞ্জের কেউ বাংলাদেশে মুখ দেখাতে পারবে না। শুধু নারায়ণগঞ্জ না; বাংলাদেশের যে অর্থনৈতিক ক্ষতি হবে সেটা মূল্যায়ন করা যাবে না। রানা প্লাজার থেকেও বেশি ক্ষতি হবে। কিন্তু আপনারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। আপনাদের কাছে গেলেই আপনারা বলবেন, আমাদের জনশক্তি নেই।
তিনি বলেন, আর ওই যে মামলা, সেটা তো কল-কারখানা অধিদপ্তরের করার কথা। তারা বলবে, এই ফ্যাক্টরিটা এতদিন ধরে বেতন না দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা হচ্ছে। রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফ্যাক্টরী পরিচালনা করার দায় দায়িত্ব কিন্তু আপনার। আমি যদি এত কথা বলি তাইলে তো আমি রাস্তা-ঘাট দিয়া চলতে পারবো না। আমাকে মেরে ফেলবে। আমি যদি এমন করে একটার পর একটা কথা বলতে পারি তবে তো আমাকে মেরে ফেলবে।
সাংসদ আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জে অনেক ফ্যাক্টরী চলছে অবৈধ। তাদের ফায়াস সেফটি নাই, ট্রেড লাইসেন্স নাই, ইলেক্ট্রিক লাইনের বিল নাই, কোনো সংস্থার সাথেও নাই অথচ তারা লাখ লাখ লোক খাটায়। এভাবে যদি চলতেই থাকে তাহলে তো আমাদের মরণ ছাড়া উপায় নাই।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে আমরা চারটি সংস্থা নিয়ে আসছি। একটা ইপিবি। এটা দিয়ে আমরা খুব ভালো মত আমরা রপ্তানি করতে পারছি। ঢাকায় দৌঁড়াতে হয় না। আরেকটা টেক্সেস অফিস। আমরা একদম সময় মত টেক্স পরিশোধ করতে পারি। আর দুইটা বোধ হয় খাল কেটে কুমির নিয়ে আসছি। একটা হচ্ছে পরিবেশ অধিদপ্তর। তাদের চোখ দিয়ে দেখায়ে দিচ্ছি তারপরও যে লাউ সেই কদু। আরেকটা হচ্ছে আপনার ডিপার্টমেন্ট কল-কারখানা অধিদপ্তর।
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন, ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল পুলিশের এসপি জাহিদুল ইসলাম, সদর উপজেলা পরিষদের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিক, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদা আক্তার খান কাজল, জাতীয় শ্রমিক লীগ নেতা কাউসার আহম্মেদ পলাশ, শ্রমিক নেতা মন্টু ঘোষ প্রমূখ।