নিউজস্বাধীন বাংলা : এবার নানা বিতর্কে বিঁধে গেলেন সিদ্ধিরগঞ্জে ওসি মীর শাহীন শাহ্ পারভেজ। তার বিরুদ্ধে পুলিশের প্রভাব বিস্তার করে অবৈধ ভাবে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে শেল্টার দেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে এই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে।
এ নিয়ে বুধবার (৩১ জুলাই) সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে একদল মানুষ এসেছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদের কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে। তারা সবাই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বাসিন্দা।
এরা হলেন, শিমরাইল এলাকার মৃত মালেকের ছেলে জাকির হোসেন, মৃত শামীম আলীর ছেলে মোতালেব, আব্দুল জলিলের ছেলে সিরাজুল ইসলাম, আমির উদ্দিনের ছেলে আলমগীরসহ আরও কয়েকজন। তারা পুলিশ সুপারের বরাবর ওসি মীর শাহীন শাহ্ পারভেজের বিরুদ্ধে বভিন্ন অভিযোগের তথ্য প্রমাণসহ ১৭ জন মাদক ব্যবসায়ীর নাম দিয়ে যান। এদের কাছ থেকে মীর শাহীন শাহ্ পারভেজ প্রতি মাসে কয়েক লাখ টাকার সুবিধা নিয়ে তাদের মদদ দিচ্ছেন বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে সম্প্রতি গণপিটুনীতে হত্যা ও এবং এক নারী আহতের ঘটনায় দায়েরকৃত দুই মামলায় ৯৫ জন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও ব্যবসায়ীদের নাম উদ্দেশ্যপূর্ণ ভাবে জড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীন শাহ পারভেজের বিরুদ্ধে।
সূত্র বলছে, এক ওয়ার্ডে গণপিটুনীর ঘটনা ঘটলেও মামলার আসামী করা হয়েছে আরও কয়েক ওয়ার্ডের লোকজন। ঘটনার সাথে তারা জড়িত না থাকলেও হয়রানি করে তাদের কাছ থেকে আর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ফন্দিতে এই মামলা দুটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপূর্ণ ভাবে করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জের এলাকাবাসী। তাদের দাবি, ওসির নির্দেশে এই মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছে।
অপরদিকে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিনের ছেলে ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মুহাম্মদ সাদরিলকেও হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে ওসি শাহীন শাহ পারভেজের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, কুমিল্লার সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি সেলিনা ইসলামের গাড়ি ভাঙচুর মামলায় কাউন্সিলর সাদরিলকে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন ওসি শাহীন শাহ পারভেজ। তবে, এর আগে কাউন্সিলরের শ্বশুরের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন এই অফিসার। পরবর্তীতে টাকা না পেয়ে কাউন্সিলরকে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত না থাকলেও মামলার আসামী করে রিমান্ড আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করেন। তিনিদিন কারা ভোগের পর সাদরিল জামিনে বের হয়ে আসেন।
শুধু তাই নয়, জমি সক্রান্ত বিষয় নিয়ে ওসি শাহীন শাহ পারভেজের কাছে বিচার চাইতে এসে লাঞ্ছিত হয়েছিলেন মফিজুর নামে এক ভূমি মালিক। এছাড়াও ওসির মদদে সাইনবোর্ডের শাপলা গেস্ট হাউজে যৌন বব্যবসা চলেছে দীর্ঘদিন।
এদিকে এলাকাবাসী বলছেন, পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ যেভাবে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন, সেই অর্জনকে ¤øান করে দিচ্ছেন ওসি শাহীন শাহ পারভেজন। ফলে, তাকে এখান থেকে বদলী না করালে অপরাধ দমন তো দূরের কথা নিরীহ মানুষেরা নানা ধরণের হয়রানির শিকার হবেন। তাই এলাকাবাসী পুলিশ সুপারের কাছে এই ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন অভিযোগের তথ্যপত্রও প্রদান করেছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি মীর শাহীন শাহ পারভেজের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পুরো ব্যাপারটাকে উদ্দেশ্য প্রণোদিত, ষড়যন্ত্রের অংশ। আমি আট মাস ধরে এই থানাতে এসেছি। এখনে আমি কাউকে ছাড় দিই নাই। কেউ আমার কাছে এসে সেবা পায়নি, হয়রানি হয়েছে এমন একজনও খুঁজে পাবেন না। মাদক ব্যবসায়ীদের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।