নিউজ স্বাধীন বাংলা : ফতুল্লা থেকে নিখোঁজ হওয়া গার্মেন্ট ব্যবসীয় মো. জাবের মিয়া টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। বিজিবি’র সাথে এই ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বিজিবির তিন সদস্য আহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার লে. কর্নেল ফয়সাল হাসান খান।
বুধবার (১৭ জুলাই) ভোরে টেকনাফের হ্নীলার জাদিমুড়া শিকলপাড়া নাফ নদীর তীরে এই বিজিবির সাথে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, তিন রাউÐ কার্তুজ এবং ১০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহত জাবের যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের এস এম জাকারিয়ার ছেলে। তিনি সাইনবোর্ড এলাকায় ভাড়া বাসায় সস্ত্রীক বসবাস করছিলেন। তিনি তিন দিন ধরে নিখোঁজ জানিয়ে তার স্ত্রী ইসমোতারা ১৬ জুলাই ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছিলেন। যার নং ৬১।
কমান্ডার লে. কর্নেল ফয়সাল হাসান খান জানান, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে জাদিমুড়ার শিকলপাড়া এলাকা দিয়ে মিয়ানমার থেকে ইয়াবার চালান আসছে এমন খবরে দমদমিয়া বিওপির সদস্যরা অভিযান চালায়। মঙ্গলবার ভোরে নাফনদী পার হয়ে কিছু লোক এপারে উঠলে বিজিবি তাদের চ্যালেঞ্জ করে। তারা বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি চালায়। আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ দেহ পাওয়া যায়। এ সময় ১টি এলজি, ৩ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ১০ হাজার পিস ইয়াবা পাওয়া যায়।
এদিকে ১৬ জুলাই ফতুল্লা মডেল থানায় জাবেরের স্ত্রী ইসমোতারা দায়েরকৃত জিডিতে উল্লেখ করেছিলেন, তিনি দীর্ঘদিন যাবত নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকায় গার্মেন্টসের ব্যবসা করে আসছিলেন। সর্বশেষ ১৩ জুলাই রাতে ফেনীর এক ব্যবসায়ী থেকে পাওনা টাকা আনতে নারায়ণগঞ্জ থেকে রওনা দিলে এরপর থেকে আর ঘরে ফিরে আসে নি। এ সময় তার ব্যক্তিগত মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।
অপরদিকে জিডি দায়েরের পর এর কর্মকর্তা শাফিউল আলম জানিয়েছিলেন, আমরা জাবেরকে ফিরিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। সর্বশেষ মোবাইল ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে জাবেরের সর্বশেষ অবস্থান টেকনাফের উখিয়ায় পাওয়া যায়।
এদিকে ঘটনার সত্যতা জানতে জিডিতে দেওয়া দুটি নাম্বারের একটিতে যোগাযোগ করা হলে নিহত জাবেরের ভাই জানিয়েছেন, আমরা এখনও নিশ্চিত নই। তবে এমন ঘটনা শুনছি। তিনি দাবি করেছেন, তার ভাই হোসিয়ারী ব্যবসায়ী। সে কখনো পান সিগারেটও খেতেন না। এবং তিনি অত্যন্ত সহজ সরল মানুষ।
ফতুল্লা মডেল থানা পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মো. আসলাম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ‘বন্দুকযুদ্ধে’ দুজন নিহত হয়েছেন। তাদের একজন জাবের। তিনি নিখোঁজ জানিয়ে ১৬ জুলাই তার স্ত্রী ইসমোতারা একটি জিডি করেছিলেন। জিডির তদন্ত কর্মকর্তা শাফিউল ট্র্যাকিং করে জানতে পেরেছিলেন তার অবস্থান টেকনাফে।
ওসি আরও জানান, হতে পারে ওই ব্যক্তি মাদকের সাথে জড়িত। তার পরিবারও বিষয়টি জানতেন। সম্ভবত দায় এড়ানোর জন্য জিডিটি করেছিলেন। তারপরও খোঁজ খবর নিয়ে দেখছি। তার বিরুদ্ধে কোথাও কোনো মামলা রয়েছে কিনা সেটির খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।