প্রেস বিজ্ঞপ্তি ঃ র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। র্যাব শুরু থেকে যে কোন ধরনের অপরাধ, প্রতারনা মূলক অপরাধ প্রতিরোধ এবং প্রতারক চক্রকে সনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও যেকোন সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সাথে সম্পৃক্তদের প্রায়শই র্যাবের নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১১ এর বিশেষ অভিযানে ১২ জুলাই ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে রাতে ডিএমপি, ঢাকার মিরপুরের কাজী পাড়া ও শাহআলী থানাধীন গুদারাঘাট হতে পাসপোর্ট অফিসে চাকুরীর প্রলোভন ও ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে প্রতারক চক্রের ০২জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলোঃ ১। আবু জাহেদ নয়ন(২৮) এবং ২। মাহমুদুল হাসান@ রনি(৩০)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভুয়া নিয়োগপত্র, মোবাইল ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানে জানা যায় গ্রেফতারকৃত আবু জাহেদ নয়ন এর বাড়ী নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানাধীন সালেহপুর গ্রামে। সে ২০১৫ সালে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর, আগারগাঁও, ঢাকা এ এমএলএসএস পদে অস্থায়ী চাকুরী নেয়। প্রায় ০১ বছর চাকুরী করার পর অনিয়ম ও জালিয়াতির কারনে তাকে চাকুরী হতে বহিষ্কার করা হয়। চাকুরীর সুবাধে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাধে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তাদের নাম ও পরিচয় ব্যবহার করে চাকুরী প্রার্থীদের বায়োডাটা সংগ্রহ করে নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন চাকুরী প্রার্থীদের চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখায়। পাসপোর্ট অফিসের সহকারী হিসাব রক্ষক, কম্পিউটার অপারেটর, এমএলএসএস’সহ বিভিন্ন পদে প্রায় ৫০জন চাকুরী প্রার্থীকে চাকুরীর প্রলোভন ও ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ৫৬ লক্ষ টাকা প্রতারণার মাধ্যমে হাতিয়ে নেয়। উক্ত টাকা গুলি আবু জাহেদ নয়ন বিভিন্ন ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে ব্যাংক, এস এ পরিবহন, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস এবং নগদ এ গ্রহণ করে এবং বিশ¡াস যোগ্যতা অর্জনের জন্য ১০জন প্রার্থীকে ১০টি ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে। নিয়োপত্র পাওয়া প্রার্থীদেরকে বিভিন্ন আঞ্চলিক কার্যালয়ে তাদের পদায়ন হয়েছে মর্মে ভুয়া দাপ্তরিক চিঠি প্রদান করে। গত ০৯ জুন ২০১৯ তারিখে উক্ত ভুয়া চিঠি নিয়ে প্রার্থীরা বিভিন্ন আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যোগদান করলে তারা জানতে পারে যে, নিয়োগপত্র গুলি ভুয়া, জাল এবং পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন অধিদপ্তর কর্তৃক ইস্যুকৃত নয়। গ্রেফতারকৃত নয়ন এই ভুয়া নিয়োগপত্র গুলো মাহমুদুল হাসান রনির মাধ্যমে তৈরি করে। ঢাকার শাহআলী থানাধীন গুদারাঘাট এলাকায় রনির কম্পিউটার কম্পোজ এর একটি দোকান আছে। ঐ দোকানে আবু জাহেদ নয়ন ও মাহমুদুল হাসান রনি মিলে ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করত। রনির দোকান হতে জব্দকৃত ল্যাপটপে এই নিয়োগপত্র তৈরীর অনেক আলামত পাওয়া যায়। প্রতারিত প্রার্থীরা সাবাই নোয়াখালীর জেলার স্থায়ী বাসিন্দা।
বেশ কয়েকজন ভূক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে অনুসন্ধান চালিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল ডিএমপি, ঢাকার মিরপুরের কাজী পাড়া ও শাহআলী থানাধীন গুদারাঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের মূলহোতা আবু জাহেদ নয়ন এবং সহযোগী মাহমুদুল হাসান রনিকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।