৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবস । সোশ্যালিস্ট পার্টি অফ আমেরিকা নিউ ইয়র্কে ১৯০৮ সালে বস্ত্রশ্রমিকরা তাঁদের কাজের সম্মান আদায়ের লক্ষ্যে ধর্মঘট শুরু করেন। নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী কাজ আর সমমানের বেতনের দাবিতে চলে হরতাল।নারী দিবস নারীর কাজের অধিকারের সাম্যতা ।নারীর কাজের অধিকার, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং কাজের বৈষম্যের অবসানের জন্য প্রতিবাদ করেন লক্ষ মানুষ। এখনো পুরুষ সমাজ মনে করে নারী দিবস নারী স্বাধীনতা মানে পুরুষের উপর খবরদারির কথা ।পুরুষের ক্ষমতা কে অমান্য করা ।নারী স্বাধীনতা মানে নারীরা বেপরোয়া ভাবে চলা । একজন কতৃত্ব করবে তাহলো শুধু পুরুষ ।যে ঘরে দুজন সমান সমান থাকে সেখানে শান্তি থাকে না ।এই চিন্তা ধারা সঠিক নয়। সেটা হলো নারী দিবসের তাৎপর্য নারীর অধিকারের সম্বন্ধে সচেনতা ।যে সচেনতা নারী কে তাদের ভয় ভীতি থেকে বের হয়ে আসার পথ দেখাবে ।আর এই সচেনতা যখন থেকে শুরু হয়েছে নারীদের তাদের অধিকার আদায় করার ক্ষমতা বেড়েছে। আজ কিছু সংখ্যক নারীরা ঘরে বসে সকাল থেকে রাত অবদি শুধু রান্নার কাজ বা টিভির সিরিয়াল দেখে সময় কাটায় না । নারীরা শিক্ষিত হয়েছে । যে নারী রাধতে জানে সে চুল ও বাধতে জানে ।ঘরে বসেও বাহিরের অনেক কাজ করছো ওনলাইনে। তারাও পুরুষের সমকক্ষ হয়ে সব ক্ষেত্রে কাজ করার উপোযোগী হচছে। অর্থনীতিতে সংসারের সাহয্যে তাদের হাত প্রসারিত হচ্ছে ।বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন অঞ্চলে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা, তাঁদের কাজের প্রশংসা এবং ভালোবাসা প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে মহিলাদের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক সাফল্য অর্জনের উৎসব হিসেবেই পালন করা হয়।আমরা ৮ই মার্চ নারী স্বাধীনতা পালন করি ঠিকই আমি মনে করি এই পৃথিবীর প্রতিটি দিনই নারীর কর্মতৎপরতায় আলোকিত হয়। দুঃখের বিষয় এখনও বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নারীর প্রতি বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের প্রতি বৈষম্য রয়েই গেছে। নারী শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতি হয় নাই। নারী দিবস নিয়ে শোরগোল কিন্তু আজও আমরা নিরাপদ না। এ পৃথিবীর কোথাও একটি নারীও ধর্ষিত হবে না এই ভরসা আজও মেলে নি। নারী শুধু ভোগ্যোর পন্য নয় , তারাও মানুষ তাদের স্বাধীন ভাবে নিজের অধিকার নিয়ে বাঁচার অধিকার আছে ।নারী নির্যাতন হচ্ছে ঘরে, বাইরে সবখানে। শিশু মেয়ে বাচ্চা সেও রেহাই পাচ্ছে না।এ লড়াইয়ে নারীরা যে এগিয়েছে এটা অস্বীকার করার উপায় নাই। তারপর ও অনেক নারী নির্যাতনের শিকার প্রতিদিন ।প্রতিবাদ হয় না তাতে প্রান হারানোর ভয় থাকে। তাকে পুরুষ সমাজ ধর্ষন করে মেরে মাঠে ঘাটে ফেলে রাখে খন্ড খন্ড করে । সমাজে কিছু শ্রেনীর নারীকে পতিতা বললে পুরুষ কেও সেভাবে খেতাবে ভূষিত করা উচিত ।কিন্তু পুরুষ তান্ত্রিক সমাজ নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী নয় তাদের সাফল্য হতে দিচ্ছে না।নারী তাদের যোগ্যতা দেশে বিদেশে প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হচ্ছে। ফলে উৎপাদন প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত নারী শ্রমিকদের যে আর ঘরে আবদ্ধ করে রাখা সম্ভব নয় তাদের আন্দোলন যে দানা বেঁধে উঠছে এটা বুঝতে পেরেছে বিশ্ব ।৮ মার্চের উৎস শ্রমিক আন্দোলন থেকে। এখনও শ্রমিক নারীদের প্রশ্নই বড় প্রশ্ন। কারণ এর মধ্যেই আছে পুরো সমাজের ইতিহাস।।জাতী গঠনে এই নারী মেয়ে বোন ,মা তিনটি রুপে সমাজে সব চাইতে গুরুত্ব পূর্ন ভুমিকা রাখছে।নারী আজ জয় যাত্রার পথে পা বাড়িয়েছে ।দেশের উন্নায়ন কাজের সকল স্তরে তাদের অবাদ বিচরন লক্ষ্যনীয় ।যে কোন দেশ তথা জাতির উননায়নে নারীরা গুরুত্ব পূর্ন ভুমিকা পালন করে আসছে ।কেননা একটি দেশের অর্ধেক নারী ।জনসংখ্যার এই বিরাট অংশ যদি পুরুষের পাশা পাশি তথা জাতি গড়ার কাজে অংশগ্রহন করে তাহলেই নারীর পুর্ন অধিকার প্রতিষ্ঠিা হবে । একজন নারী তখন পুরুষের পাশা পাশি লেখক , সেবিকা , নার্স , পুলিশ , ব্যাংকার , শিক্ষিকা , অফিস আদালত , এমন কি চাষের কাজে বাড়ি নির্মান কাজে সব জায়গায় সমান বিচরন করতে পারে । ২০২৫ সালে এসেও সেই সমান অধিকার এখনো পায় নাই নারী ।নারী আজও নিরাপদ নয় । তাই সব ক্ষেত্রে পুরুষের মত বিচরন করা নারীদের সহজ নয় । পুরুষের পেশী জড়ের কাছে নিজেকে দুর্বল ভেবে গুটিয়ে রাখে । সকাল হলেই নিউজ পেপারে দেখতে হয় স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন । যে জাতি যত বেশী নারী স্বাধীনতায় বিশ্বাসী সে জাতি ততো বেশী উন্নতির শিখরে । একজন শিক্ষিত সাহসী মা ই পারে একজন সুন্দর সন্তানের ভবিষ্যত গড়ে তুলতে ।সব শেষে কবির ভাষায় বলতে চাই -“বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যানকর ।অর্ধেক তার করিয়েছে নারী …অর্ধেক তার নর” ।
