বিশেষায়িত হাসপাতালের এক কেবিনে রোগী তার বেড ছেড়ে সোফায় শুয়ে স্যালাইন নিচ্ছিল। হঠাৎ অস্থির হয়ে উঠে। হাত পায়ের কাপুনিতে স্যালাইনের স্ট্যান্ড পড়ে যাচ্ছিল। ভাগ্যিস কেবিনের দরজা খোলা ছিল। রোগীর ওষ্ঠাগত প্রাণের চরম অবস্থা একজন ওয়ার্ড বয়ের চোখে পড়ে। মূহুর্তের মধ্যে ২জন ওয়ার্ড বয় ছুটে যায় তার কাছে। ধরাধরি করে তাকে সোফা থেকে বেডে শুইয়ে দেওয়া হয়। সিনিয়র নার্স ও ডিউটি ডক্টর সবাই রোগীর কাছে ছুটে আসেন। এমন শোচনীয় সময়ে কেবিনে রোগীর কোনো আপনজন ছিলনা বলে নার্স রোগীর নিকটাত্মীয়দেরকে ভর্ৎসনা করেন। রোগীর প্রতি আরো যত্নবান হতে ডাক্তার ও নার্স তার স্বজনদেরকে জোর তাগিদ দেন যাতে রোগীকে এক মুহুর্তের জন্যও একা থাকতে না হয়।
পুরো বিষয়টি হাসপাতালের পিআরও সংগ্রহ বার্তার সম্পাদকের নজরে আসে। তিনি তার চেয়ারে বসে না থেকে দৌড়ে গিয়ে অক্সিজেন আনার চেষ্টা করে। কিন্তু অক্সিজেনের সিলিন্ডার এতো ওজন ছিল যে শত চেষ্টায়ও তা একার পক্ষে বহন করা সম্ভব হয়নি। পরে সে ওয়ার্ড বয়দের শরণাপন্ন হয়। কিন্ত ওয়ার্ড বয়ও তা তুলে নিতে পারছিল না। ফ্লোরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে স্লোথ গতিতে অক্সিজেনের সিলিন্ডার মমূর্ষ রোগীর কেবিনের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। ততক্ষণে মানবতাকর্মী হাসপাতালের পিআরও দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করতে থাকে। কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে দৌড়ে ছুটে যায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অফিসে। কড়া নাড়ার নিয়ম না মেনেই অফিসের দরজায় দাড়িয়ে জানিয়ে দেয় যে হাসপাতালের একজন বিশেষ রোগীর হয়তো এখনই চিরবিদায়।
আইসিইউ বেডের মতো সার্বক্ষণিক অক্সিজেন সরবরাহের সুব্যবস্থা না থাকলেও অন্ততঃ পোর্টেবল অক্সিজেনের ব্যবস্থা প্রতিটি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে থাকা অতীব জরুরি। অফিসিয়াল ম্যানারের পাশাপাশি মানবিক বিষয়গুলোর প্রতি যত্নবান হওয়ার জন্য দেশের প্রতিটি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের কর্তৃপক্ষের প্রতি সবিনয় অনুরোধ করেন সংগ্রহ বার্তা সম্পাদক।