কন্যার এ কষ্ট চোখে দেখা যায় না!
আমাদের কন্যা রোজ রাতে ঘুমাতে যাবার আগে বসে থাকে তার বাপ কখন ফিরবে? কলিংবেলের শব্দ শুনলে দৌঁড়ে গিয়ে দরজা খুলে জড়িয়ে ধরে। বাপের কাছ থেকে আদর নেওয়ার দৃশ্য দেখলে মনে হবে, কতোকাল পরে বাপের সাথে তাদের দেখা। দুই সন্তানকে দুই হাতে জড়িয়ে বাবা ও সন্তানের সারাদিনের হিসেব মিলিয়ে তবেই ঘুমাতে যাওয়া হয় তাদের।
মাখামাখি বাবার গন্ধমাখা এই আদর কন্যার বিশ্বাসের ভীত শক্ত করে। বাবা ছাড়া কন্যার কচি মনে,কে আর পারে এমন করে সুখস্মৃতি ছড়িয়ে দিতে? জন্মগতভাবেই কন্যারা বাবার ভালোবাসায় অন্ধ হয়। যে কারণে পরবর্তী জীবনেও স্বপ্নের পুরুষের মাঝে বাবার ছায়া খোঁজে বেড়ায়।
আমাদের ঘরের মতো নিশ্চয়ই প্রতিটি ঘরেই কন্যা অধীর অপেক্ষা নিয়ে বাবার আদর পাওয়ার জন্যে এমনটাই করে ,ভালোবাসার কাঙ্গাল হয়ে বসে থাকে। প্রতিটি কন্যার সবচেয়ে দূর্বল এবং না বলা ভালোবাসার জায়গা তার বাবা, মেয়েদের প্রথম বিশ্বস্ততার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য জায়গা বাবা।এই পৃথিবীতে বাবার চেয়ে সুন্দর আর ভালো মুহূর্ত মেয়েদের কেউ কোনদিন উপহার দিতে পারেনি, পারবেও না।যে কন্যা বাপের আদর পায় নাই তার মতো হতভাগ্য আর কেউ না।(ব্যতিক্রম কোন উদাহরণ হতে পারে না।)
কথা নেই বার্তা নেই, সেই বাপটা যদি হঠাৎ কোনদিন অজানা কারণে নিঁখোজ হয়ে যায়, ঘরে না ফিরে, জড়িয়ে ধরে আর আদর না করে! কল্পনা করতে পারেন, কেমন কাটে সেই সন্তানের বুকের ভিতর? কচি মনের এই ক্ষত শুকানোর সাধ্য থাকে কোন বৈদ্যের?
স্বাভাবিক মৃত্যুকে মেনে নেয়া গেলেও গুম হয়ে নিঁখোজ হয়ে নির্মমতার শিকার হয়ে বাবা হারানোর কোন সান্ত্বনা হয় না।
স্হান,কাল পাত্র ভেদে নয়, কোন কালেই এভাবে হারানোর যন্ত্রণা যেন কাউকে সহ্য করতে না হয়। এমন মায়াবী মুখখানির অসহায় কান্না দুচোখে সহ্য করা যায় না।
ছবির মেয়েটিকে আমি চিনি না কিন্তু ওর করুণ কান্না যেন আমার বুকের ভিতর নোনা জলের ঢেউ তুলে চোখ গলিয়ে বের হয়ে আসছে!