১১ জুলাই। এই ধরিত্রীতে আগমন। দিনটা কখনও কখনও দারুণ আনন্দময় হয়ে উঠে। নিজে ভুলে গেলেও আশপাশের লোকজন ভুলেন না। ভুলতে দেন না। যেমনটা আজ আমার প্রিয় কর্মস্থল ঢাকাপ্রকাশ-এর সহকর্মীরা ভুলেননি। নিজের কাজে মগ্ন ছিলাম। হঠাৎ লক্ষ্য করলাম পাশের সিটে বসা শাহজাহান মোল্লা নেই। একটা চা খেতে যাব যাব নিচে। কিন্তু অফিসের কোথাও শাহজাহানকে খুঁজে পাচ্ছি না। এরমেধ্যেই বিকালে প্রধান সম্পাদক মোস্তফা কামাল ভাই অফিসে আসলেন। তার কিছুক্ষণ পর শাহজাহান হাজির। বললাম, কই গেলা, তোমাকে এতক্ষণ ধরে খুঁজেতেছি। কোন জবাব পেলাম না। দেখলাম সে যুগ্ম-বার্তা সম্পাদক জাকির হোসেনের সঙ্গে কি যেন ফিসফিস করে বলছে। তারপরই শাহজাহান কামাল ভাইয়ের রুমে ঢুকল। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে কামাল ভাই বের হয়ে বললেন, হ্যাপি বার্থ ডে বিপুল। তখনই বুঝতে পারলাম কিছু একটা ঘটেছে। এরপর সবাই মিলে বোর্ড রুমে গেলাম। এরইমধ্যে শাহজাহান, সিফাত, রূপস মিলে কেক নিয়ে সেখানে হাজির। অতপর কেক কেটে সেলিব্রেট…লাইফ ইজ বিউটিফুল। সত্যিই জীবন অপূর্ব সুন্দর। এখানেই বেঁচে থাকার আনন্দ।
আমি খুবই ক্ষুদ্র একজন মানুষ। জীবনের বড় অংশ অর্থাৎ শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য, যৌবনের বিরাট কাল কাটিয়ে এসেছি চায়ের রাণী মৌলভীবাজারের রাজনগরে। যেখানে আমার নাড়ী পুঁতা। আমার শিকড়। কিন্তু আমাদের সময় এখনকার মত ঘটা করে জন্মদিন উদযাপন হত না, হয়নি। হালে এসে ইচ্ছা না থাকলেও জন্মদিন পালন করতে হয়। হয়ে যায়। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক তো রীতিমত জানান দেয় কবে ধরিত্রীতে আগমন ঘটেছিল এই অধমের।
১০ জুলাই সন্ধ্যার পর থেকেই সেটা টের পাচ্ছিলাম। বিভিন্ন জন ফেসবুকে, মোবাইলে ফোন করে কিংবা এসএমএস করে শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন। আজ সারাদিন সেই শুভেচ্ছা বার্তায় ফেসবুকের টাইমলাইন ভরে উঠতে থাকে… সত্যিই আনন্দময় একটা বিষয়। এতো এতো লোক ভালোবাসেন, পছন্দ করেন, কল্যাণ কামনা করেন। তাদের আর্শীবাদ, শুভেচ্ছা, জীবনকে নতুন করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা হয়ে পথ দেখায়। রসদ যোগায়। টনিকের মত কাজ করে। সবাই যে পছন্দ করেন, ভালোবাসেন কিংবা পছন্দ করবেন ভালোবাসবেন- তাও কিন্তু নয়। তারপর ভালোবাসার মানুষের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।
১০ জুলাই রাত ১২টা বাজতেই আমার কলিজার টুকরো দুই রাজকন্যা একসঙ্গে এসে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘হেপি বার্থ ডে বাবা’। তখন মনে হল আজ তো ১১ জুলাই। আর এই বন্ধের দিনে কর্মস্থলে সহকর্মীদের ভালোবাসা সত্যিই অতুলনীয়। সবার প্রতি আমি নমিত।
-নিজামুল হক বিপুল