কালের আবর্তনে কেবল পরিবেশ বদলায়না; আদর্শ ও নীতিতেও পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। সূর্যাস্তের পরে পৃথিবী ভয়ানক অন্ধকারে হারিয়ে যেত। সৃষ্টির সেরা জীব মানুষও পাহাড়ের গুহায় জড়োসড়ো হয়ে রাত কাটাত। আগুন আবিস্কারের মধ্যদিয়ে অন্ধকারের ওপর আলোর বিজয় সুনিশ্চিত হয়েছিল। প্রথম আলোকচ্ছটা এতটাই নাতিদীর্ঘ ছিল যে এক পাও সামনে যাওয়ার সুযোগ হতনা। মানুষ সামনে চলার জাতি। তাই তার সামনে চলার জন্য চাই আলো।
যুগ-যুগান্তরে আলোর সন্ধানে মানুষের ধ্যান জ্ঞান ও গবেষণার ফসল আজকের পৃথিবীর যত পুঞ্জিভূত আলো। প্রত্যেকটি পুঞ্জিভূত আলোর প্রদীপ/তেলে জ্বলা হেরিকেন, চার্জে চলা লাইট আর বিদ্যুৎ ব্যবহৃত বাতি যখন তার ক্ষমতায় আলো প্রদর্শন করে; তখন আলোর বিচ্ছুরণে অন্ধকারের প্যাঁচারা লুকিয়ে থাকতে বাধ্য হয়। কিন্তু সে স্বর্ণোজ্জ্বল আলোর চতুর্দিকটাই আবদ্ধ থাকে অন্ধকারের বেড়াজালে। প্রদীপের আলো যত দুর্বল হতে থাকে অন্ধকার তত শক্তিশালী হয়ে ওঠে। একটা সময় অন্ধকারের দাপটে আলোর সীমানা সংকোচিত হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠিত হয় অন্ধকারের রাজত্ব। আলো আর অন্ধকারের এই খেলা চলে আসছে সহস্রাব্দ থেকে।
প্রবাদ আছে- “তথ্যই শক্তি” আর “জ্ঞানই আলো”। এ দু’টি প্রবাদ বাক্য মনে-প্রাণে ধারণ করেই একজন সাংবাদিক গড়ে ওঠে। কেবল ৫৫ হাজার বর্গ মাইলের ক্ষুদ্রায়তনের বাংলাদেশকেই নয়; একজন সাংবাদিকের মর্যাদা দিতে না পারলে ব্যর্থতার পরিচয় দিতে হয় বিশ্বের বৃহত্তম সীমানায় সাজানো উন্নত রাষ্ট্রকেও। কেননা, জ্ঞান বিজ্ঞান আর উৎকর্ষতার শীর্ষাবস্থানে অত্যাধুনিক এই বিশ্বের কেউ সুরম্য আলোয় উদ্ভাসিত অট্টালিকা ছেড়ে পর্বতের অন্ধকার গুহায় ফিরে যেতে চায়না। চায়না কেউ কোনো কিছু অজানার অন্ধকারে নিজেকে লুকিয়ে রাখতে।
বিশ্ব তথ্য উন্মুক্ত দিবস এখন আর ১২ মাস প্রতীক্ষার পরে পালিত হয়না; বরং প্রতিক্ষণে পালিত হয় ইন্টারনেটের মাধ্যমে। তথ্য উন্মুক্ত বিশ্বের স্মার্ট বাংলাদেশে এখনো যারা সাংবাদিকদের কাজে বাঁধা দিচ্ছে, সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালাচ্ছে এমন কি হত্যা করছে সাংবাদিক তারা সুশীল সমাজ ও উন্নত বিশ্ব থেকে এমনভাবে বিতাড়িত হবে যে, অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা কোনো প্যাঁচার আকৃতি দেখা গেলেও তাদের মুখাবয়ব আলোতে আর দেখা যাবেনা।
সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলাকারীদের মধ্য থেকে একজন বলছিলেন, ‘ওই তরা অন্ধকারে নিয়ে মার’। তথ্যসূত্র- প্রথমআলো
সাংবাদিক নাদিমের ওপর হামলার মূল নায়ক চেয়ারম্যান বাবু অন্ধকারে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তথ্যসূত্র- বাংলানিউজ২৪
চেয়ারম্যান বাবু খ্যাত মানবাকৃতির প্যাঁচাটি নিজেকে অন্ধকারে সরিয়ে রেখেছিল; তার তথ্য ও সেই প্যাঁচার অনুসারিদের একজন অন্ধকারে নিয়ে আলোর সাংবাদিককে মারার নির্দেশ দানের উক্তিটি ভাইরাল হয়ে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। আর বিশ্ববাসি ধিক্কার জানাচ্ছে অন্ধকারের প্যাঁচাতুল্য বাংলাদেশিদের প্রতি।
লেখক- সংগ্রহবার্তা সম্পাদক