৫২ বছরের স্বাধীন বাংলাদেশে ৪ স্তরের জনগোষ্ঠিঃ নিম্নস্তরের জনসাধারনই অধিকতর বৈষম্যের শিকার
১ম স্তরঃ বর্তমান বাংলাদেশে স্বর্গরাজ্যে বসবাস করছে আমলাগণ। রোদ-বৃষ্টি, শীত-গ্রীষ্ম, ঝড়-বন্যা আর ভয়াবহ দুর্যোগ বেমালুম অতিবাহিত হয়ে যায় তাদের কাছ থেকে যাদের নাম কোনোভাবে সরকারি ভাতা প্রাপ্ত কর্মচারির তালিকায় রয়েছে। যাদের আকাশচুম্বী অট্টালিকার মূল ফটকে থাকে সশস্ত্র বাহিনী। আর লাল গালিচার ওপরে খান্দানী খাট পালঙ্ক ও আধুনিক আসবাবপত্রে সাজানো সরকারি বাস ভবন। খেমতের জন্য গোলাম আর চলার জন্য লাক্সারিয়াস গাড়ি।
২য় স্তরঃ ১ম স্তরের পরের সুখের রাজ্যে বসবাস করেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারা। যারা নামে বেনামে অর্থের পাহাড় আর বিশ্বের সেরা শান্তিপূর্ণ দেশে গোপনে ক্রয়করা বাড়ি সাজিয়ে রেখে জনতার সামনে সবকিছু উজাড় করে দেওয়ার অভিনয় করে যাচ্ছে।
৩য় স্তরঃ সেইসব ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ঘিরে রাখা উপনেতা বা দালাল চক্র। যারা তাদের সিনিয়রদের ছবির সাথে নিজের ছবি দেয়ালে দেয়ালে ছাপিয়ে দিয়ে হারজান মওলা বনে যান। এমনকোনো দফতর নাই; যে দফতরে এদের আত্মীয় স্বজন নাই। গরিব লোকদের কাছে এরা মুশকিলে আসান বা ভাগ্য বিধাতা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করার সুযোগ পান। ছোট-বড় টেন্ডারবাজি, চাকরি আর জমি দখলদারি এমন কি ত্রাণ পেতেও এদের কাছে আসতে হয় ৪র্থ স্তরের লোকগুলোকে।
৪র্থ স্তরঃ কোনো দল মতে বিশ্বাসী নয়; এমন সাধারণ জনতা। অনাহারে থেকেও নীরব। তোষামোদকে চরম ঘৃণা করে আপনমনে বাঁচার পথ খুঁজে বেড়ায়। দেশের অধিকাংশ লোক ৪র্থ স্তরের। এদের দিন আনতে পান্তা ফুরোয়। হারভাঙ্গা খাটুনির পরেও তাদের সঞ্চয়শূণ্য জীবনে আর সুখের দেখা মেলেনা। জোটেনা এদের চিকিৎসা ফলে রোগশোকে জীবনাবসান ঘটে।
এমন বৈষম্যের বাংলাদেশে কবে সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠিত হবে; তারও কোনো লক্ষণ নেই বলে ভাবুকদের ঘুম হারাম। গত ২৪ মার্চ ২০২২এ যুগান্তরে বৈষম্যের কারণে সামাজিক অস্থিরতা বাড়ছে শিরোনামে যে সংবাদটি পাঠকদের জন্য সংযুক্ত হল।