এইদিনে মনে পড়ছে কিছু মানুষের কথা, যারা বিশ্ববিদ্যালয় এপ্রুভাল পাওয়া পর্যন্ত ওতোপ্রোত ভাবে জড়িত ছিল। নানাভাবে নিজস্ব ক্যাপাসিটিতে ভুমিকা রেখেছেন। প্রতিষ্ঠান হিসাবে এপ্লিকেন্ট ছিল ডিআইআইটি। প্রয়াত ইউজিসি চেয়ারম্যান এটিএম জহুরুল হক স্যারের নেতৃত্বে পরিদর্শক দলের পরামর্শে ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিঃ এপ্লিকেন্ট করা হয় (তখন ট্রাষ্টি বা ফাউন্ডেশনের বিষয় ছিল না)।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ড. সবুর খান মহোদয়কে ধন্যবাদ দেওয়ার মতো ভাষা আমার জানা নেই। তিনি ২০০০ সালের শেষের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার এক দূরদর্শী সিদ্ধান্তগ্রহণ ও নির্দেশনা দেন (চেয়ারম্যান স্যার অনেকবার বলেছেন আমাদের প্রিয় বর্তমান ভিসি স্যারের অনুপ্রেরণা উনার এই সাহসী সিদ্ধান্ত)। আমরা কাজ শুরু করি। মাঝখানে একদিন ফোন করে আমাকে বলেন, একটু অফ রাখো (শুনেছি আমেরিকা ফেরত একজন শুভাকাঙ্ক্ষী স্যারকে কিছুটা কনফিউজড করেছিলো)। আবার প্রায় ছয় মাস পরে ফোনেই একদিন বললেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ আবার শুরু করো।
প্রতিষ্ঠাতার নির্দেশনায় ভুমিকা রাখার মধ্যে প্রথমেই বলতে হয় ড. মোস্তফা কামাল সাহেবের কথা, যিনি প্রজেক্ট প্রোপোজাল তৈরী ও বিশ্ববিদ্যালয় এপ্রুভাল এর কাজ সমন্বয়ন করেছেন। পুরো প্রোপোজালটি কম্পোজ করেছেন ডিআইআইটি’র তৎকালীন শিক্ষক মি: রায়হান (সম্ভবত এখন অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী), সহযোগিতায় মি: ফিরোজ আলম মিয়া (সকল সুযোগ সুবিধাসহ অবসর প্রাপ্ত)। প্রোপোজালটির পরতে পরতে গ্রামার্টিক্যাল চেক করেছেন প্রফেসর ড: নুরুল আজম (অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী শিক্ষক)। স্মরণ করছি, ডিআইআইটি’র তৎকালীন খন্ডকালীন ও বুয়েটের শিক্ষক (বর্তমানে গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি’র শিক্ষক) জনাব ড. এমএ হাকিম নিউটন যিনি সিএসই ও সিআইএস প্রোগ্রামের সিলেবাস, মি: এনামুল হক এমএস ইন এমআইএস প্রোগ্রামের সিলেবাস, বিবিএ/এমবিএ’র সিলেবাস জনাব মোস্তফা কামালের তত্ত্বাবধানে বা নিজেই প্রণয়ন করেছেন।
মনে পড়ছে, মনিরুদ্দিন মুন্নার কথা যিনি ডিআইআইটি’র একজিস্টিং ফার্নিচারের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অতিরিক্ত ফার্নিচার ক্রয় করেছেন। মি: জিল্লুর রহমান কম্পিউটার ল্যাবরেটরির উন্নয়ন ও সুপারভাইজ করেছেন। মনে পড়ছে মি: ডিআইআইটি’র তৎকালীন একাউন্টস অফিসার (বর্তমানে চট্টগ্রাম ডিআইআইটি’র অপারেশন্স হেড) মি: মোঃ শাহ নেওয়াজ মজুমদার জুয়েল যিনি ডিআইআইটি’র খরচের অতিরিক্ত খরচ (এপ্রুভড) বিনা বাক্য ব্যয় করেছেন। বই ক্রয় ও লাইব্রেরী সামলেছেন মি: জাবাদুল ইসলাম বাবু (বর্তমানে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল একাডেমিতে কর্মরত)। বিশ্ববিদ্যালয়ের লোগো ডিজাইন করেছে ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের ডিজাইনার মি: রনি, প্রথম ওয়েবসাইট ডেভেলপ করেছে ডিআইআইটি’র শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান। ড্রাইভার আকরাম যিনি আমার গাড়ীর ড্রাইভার (ড্যাফোডিল প্রদত্ত অফিশিয়াল গাড়ী) প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ইউজিসি ও এডুকেশন মিনিস্ট্রিতে যাতায়াতে ভুমিকা রেখেছেন।
খুব মনে পড়ছে তৎকালীন প্রিয় শিক্ষার্থীদের যারা এপ্রুভাল কালীন এবং এপ্রুভাল পরবর্তী ৬ মাস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি ক্লাস করেছে, সেক্রিফাইস করেছে। তাদের ক্লাসের ওভার-ল্যাপিং বা পরবর্তী ক্লাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা আমি ঢের দেখতে পাচ্ছি। আমি স্মরণ করছি ড. ফখরে হোসাইন ও ড. মোঃ মাসুম ইকবালসহ ডিআইআইটি’র তৎকালীন শিক্ষকবৃন্দ যাদের বায়োডাটা সমৃদ্ধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রোপোজালকে। তাছাড়া, ডিআইআইটি ও ড্যাফোডিল কম্পিউটার্সের প্রায় সকল সদস্যেরই ভুমিকা ছিল। সবার নাম উল্লেখ করা সম্ভব নয়। ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন আশাকরি।
প্রোপোজাল ফাইনাল ড্রাফটের পর প্রতিষ্ঠাকালীন ভাইস চ্যান্সেলর হিসাবে প্রয়াত প্রফেসর ড: আমিনুল ইসলাম স্যার ও বিজনেস ফ্যাকাল্টি’র প্রতিষ্ঠাকালীন ডীন হসাবে প্রফেসর শাহজাহান মিনা স্যার সম্মত হয়েছিলেন এবং প্রোপোজাল চুড়ান্তকরনে বিশেষ ভুমিকা পালন করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এই দুই স্যারের ভুমিকা অনস্বীকার্য। জনাব মোস্তফা কামালতো প্রতিষ্ঠাকালীন রেজিস্ট্রার হিসাবে তার ভুমিকায় ছিলেনই।
একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা একটা বিশাল কর্মযজ্ঞ। সবকিছু মনে রাখা বা সবার দায়িত্ব পুংখানুপুংখ তুলে ধরা দুরূহ। আমি মনেকরি প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতার সাথে সহযোগি ভুমিকায় ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স ও ড্যাফোডিল ইনষ্টিটিউট অব আইটি (ডিআইআইটি) প্রতিষ্ঠান হিসাবে এবং এ দুটো প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।
স্মৃতিচারণে মোহাম্মদ নূরুজ্জামান, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা- ড্যাফোডিল পরিবার