মানুষ আল্লাহর বিস্ময়কর সৃষ্টি। মানুষের শরীরের মধ্যে তার মস্তিষ্ক। আরেকটি বিস্ময়কর সৃষ্টি। অনাদিকাল থেকে মানব মস্তিষ্ক মানুষকে বিস্মিত ও হতবুদ্ধি করে চলেছে। অনেক বিজ্ঞানী এবং ডাক্তার মানব মস্তিষ্ক সম্পর্কে জানতে গিয়ে তাদের জীবনের পুরো সময় পার করে দিয়েছেন।
এটা কোনো বিস্ময়কর ব্যাপার নয় যে মানুষ এই অবিশ্বাস্য রহস্যজনক অঙ্গ সম্পর্কে জেনে আনন্দ লাভ করছে। নিচে আপনি মানুষের মস্তিষ্ক কীভাবে কাজ করছে, কীভাবে উন্নতি করছে, কীভাবে মানুষকেই নিয়ন্ত্রণ করছে, কীভাবে এটা ঘুম, স্বপ্ন, স্মরণশক্তির ওপর প্রভাব বিস্তার করছে এ রকম আরও অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য সম্পর্কে জানতে পারবেন যা আপনাকে প্রভাবিত ও উপকারী করবে।
এই বিস্ময়কর ও মজাদার তথ্যগুলো জেনে আপনি যাচাই করুন আপনার মস্তিষ্কের প্রখরতা। শিখুন এবং জানুন আপনার মস্তিষ্ক সম্পর্কে।
১. ওজন:মানুষের মস্তিষ্কের ওজন প্রায় ৩ এলবিএস।
২. সেরেব্রাম: সেরেব্রাম মস্তিষ্কের সবচেয়ে বড় অংশ এবং মস্তিষ্কের ৮৫ ভাগ ওজনই সেরেব্রাম বহন করে।
৩. আবরণ: মস্তিষ্কের ওজনের প্রায় দ্বিগুণ ওজন হচ্ছে মস্তিষ্কের আবরণ বা চামড়ার।
৪. ধূসর পদার্থ: মস্তিষ্কের ধূসর পদার্থ তৈরি হয় নিউরন দিয়ে যা বিভিন্ন বাহ্যিক এবং আভ্যন্তরীণ সংকেত নিয়ন্ত্রণ করে।
৫. সাদা পদার্থ: সাদা পদার্থ Dendrite ও অ্যাক্সনের সূক্ষ্ম তন্তু দিয়ে তৈরি হয় যা নিউরনকে সংকেত পাঠানোর ক্ষেত্র সৃষ্টি করে।
৬. ধূসর ও সাদা পদার্থের পরিমাণ: মস্তিষ্কের ৬০ ভাগ সাদা পদার্থ এবং ৪০ ভাগ ধূসর পদার্থ।
৭. পানি: মানব মস্তিষ্কের ৭৫ ভাগ পানি রয়েছে।
৮. নিউরন: আপনার মস্তিষ্কে একশ বিলিয়ন নিউরন রয়েছে।
৯. ব্যথাহীনতা: মস্তিষ্কে ব্যথা সংগ্রাহক কোনো অঙ্গ নেই তাই মস্তিষ্ক কখনো ব্যথা অনুভব করে না।
১০. শাখা-প্রশাখা: প্রত্যেক নিউরনে ১০০০ থেকে ১০,০০০ শাখা- প্রশাখা বা সিন্যাপসিস রয়েছে।
১১. সবচেয়ে বৃহৎ মস্তিষ্ক: হাতির মস্তিষ্ক মানুষের মস্তিষ্কের অপেক্ষা বৃহৎ হলেও হাতির মস্তিষ্ক তার দেহের ০.২৫ ভাগ যেখানে মানুষের মস্তিষ্ক তার দেহের ওজনের দুই ভাগ। এতে বোঝা যাচ্ছে মানুষের মস্তিষ্কই সবচেয়ে বড়।
১২. রক্ত সঞ্চালক শিরা: একশ মাইল লম্বা শিরা রয়েছে মানব মস্তিষ্ক।
১৩. চর্বি: মানুষের মস্তিষ্ক সবচেয়ে চর্বিবহুল অংশ এবং দেহের মোট চর্বির প্রায় ৬০ ভাগ। মস্তিষ্কের বৃদ্ধিকরণ প্রক্রিয়া গর্ভাশয় থেকে শুরু করে মানব মস্তিষ্ক ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত নিজেকে বৃদ্ধি করে এক অবিশ্বাস্য পথে এগিয়ে যায়।
১৪. নিউরন: নিউরন বৃদ্ধির হার প্রথম ভ্রূণ সৃষ্টির পর থেকে প্রতি মিনিটে প্রায় ২৫০ হাজার।
১৫. জন্মের সময় আকৃতি: জন্মের সময় থেকে মানব মস্তিষ্ক পূর্ণাঙ্গ মানুষের মস্তিষ্কের আকৃতি নিয়ে আসে এবং মস্তিষ্কের প্রায় পূর্ণাঙ্গ কোষ নিয়েই আসে।
১৬. নবজাতকের বৃদ্ধি: নবজাতকের প্রথম বছর মস্তিষ্ক তিনবার আকারে বৃদ্ধি পায়।
১৭. বৃদ্ধিকরণের সমাপ্তি: মস্তিষ্ক ১৮ বছর বয়সের পর বৃদ্ধি হয় না।
১৮. সেরেব্রাল কর্টেক্স: মস্তিষ্ক যত ব্যবহৃত হয় ততই এর সেরেব্রাল কর্টেক্স মোটা হতে থাকে।
১৯. উদ্দীপকের ভূমিকা: একটি উদ্দীপক পরিবেশে শিশু ২৫% বেশি দক্ষ হয়ে গড়ে যে কোনো অনুদ্দীপক পরিবেশে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত শিশুর তুলনায়।
২০. নতুন নিউরন: মানুষের মস্তিষ্কের সারা জীবন ্লায়ু বৃদ্ধি করতে থাকে পরিবেশের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে গিয়ে।
২১. শব্দ করে পড়ার উপকারিতা: শব্দ করে পড়া এবং শিশুদের সাথে কথা বলা মস্তিষ্কের বৃদ্ধির জন্য মঙ্গলজনক।
২২. আবেগ: আনন্দ, জয়, সুখ, ভয় এবং লজ্জা ইত্যাদি আবেগীয় অনুভূতি শিশু জন্ম থেকেই বহন করে। শুধু পরিবেশের এবং বৃদ্ধি প্রতিপালনের প্রক্রিয়া সেই আবেগীয় অনুভূতিকে আকার দেয়।
২৩. মস্তিষ্কের প্রথম অনুভূতি: প্রথম শিশু ত্বকের মাধ্যমে অনুভূতি পেতে শেখে। ঠোঁট এবং গালের স্পর্শ অনুভূতি জন্মায় আট সপ্তাহের মধ্যে এবং বাকি অনুভূতি জন্মের ১২ সপ্তাহের মধ্যে জন্মায়।
২৪. দ্বিভাষাকেন্দ্রিক মস্তিষ্ক: যেসব শিশু পাঁচ বছর বয়সের আগে দুটি ভাষা শেখে তাদের মস্তিষ্ক অন্যদের তুলনায় ভিন্ন হয় এবং তাদের ধূসর পদার্থ বেশি ঘন হয়।
২৫. মস্তিষ্কের ওপর যক্ষ্মার প্রভাব: বিভিন্ন সমীক্ষা থেকে দেখা যায় যে, যেসব শিশুর স্বাভাবিক বিকাশে যক্ষ্মার প্রভাব বেশি তাদের মস্তিষ্ক বেশি আঘাত পেয়ে থাকে। মানব মস্তিষ্কের ক্রিয়া
২৬. অক্সিজেন: দেহের মোট অক্সিজেনের প্রায় ২০ ভাগ মস্তিষ্ক ব্যবহার করে থাকে।
২৭. রক্ত: অক্সিজেনের মতো প্রায় ২০ ভাগ রক্তই মস্তিষ্ক আদান-প্রদান করে।
২৮. অবচেতন: যদি মস্তিষ্ক ৮ থেকে ২০ সেকেন্ড রক্ত না পায় তবে মানুষ জ্ঞান হারায়।
২৯. গতি: মানব মস্তিষ্ক তথ্য আদান- প্রদান করতে পারে ন্যূনতম ০.৫ মিটার সেকেন্ড থেকে সবচেয়ে বেশি ১২০ মিটার সেকেন্ড পর্যন্ত।
৩০. ক্ষমতা: যখন মস্তিষ্ক জেগে থাকে তখন মস্তিষ্ক ১০ থেকে ২৩ ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে যা দিয়ে একটি বাল্ব জ্বালানো যায়।
৩১. হাই তোলা: এটা ধারণা করা হয় যে, একবার হাই তোলা মস্তিষ্কে বেশি অক্সিজেন পাঠাতে কাজ করে যাতে মস্তিষ্ক শান্ত হয় এবং একে জাগিয়ে রাখা যায়।
৩২. নিউকর্টেক্স: নিউকর্টেক্স মস্তিষ্কের প্রায় ৭৬ ভাগ অংশ তৈরি করে। মানুষের ভাষা আদান প্রদান এবং চেতনার জন্য নিউকর্টেক্স দায়ী। প্রাণীদের চেয়ে মানুষের মস্তিষ্কের নিউকর্টেক্স বেশি মোটা।
৩৩. ১০ ভাগ: মানুষের বয়স্ককালে মস্তিষ্ক ১০ ভাগ কাজ করে থাকে অন্য সময়ের তুলনায় এটা সত্যি নয়। মস্তিষ্কের প্রতিটা অংশই তার কাজ জানে।
৩৪. মস্তিষ্কের মৃত্যু: মস্তিষ্ক ৪ থেকে ৬ মিনিট অক্সিজেন ছাড়া বাঁচতে পারে এবং তারপর মারা যেতে থাকে। ৫ থেকে ১০ মিনিট অক্সিজেন না থাকলে মস্তিষ্কের স্থায়ী সমস্যা দেখা দেয়।
৩৫. সর্বোচ্চ তাপমাত্রা: যখন আপনি জ্বরে আক্রান্ত হবেন তখন মনে রাখবেন মানুষের মস্তিষ্কের সর্বোচ্চ তাপ সহনীয় ক্ষমতা ১১৫.৭ ডিগ্রি এবং ততক্ষণ পর্যন্ত মানুষ বাঁচতে পারে।
৩৬. চাপ সহনীয় ক্ষমতা: যখন মানুষকে অত্যধিক চাপ সহ্য করতে হয় তখন মস্তিষ্কের কোষ, গঠন বা আকার এবং কাজ বাধাগ্রস্ত হয়।
৩৭. ভালোবাসাজনিত হরমোন এবং আত্মসংবৃত্তি: অক্সিটোক্সিন নামক হরমোন মস্তিষ্ক থেকে ক্ষরিত হয় এবং ভালোবাসা এবং আত্মসংবরণের জন্য দায়ী।
৩৮. খাবার এবং বুদ্ধিমত্তা: নিউইয়র্কের ১ মিলিয়ন শিশুর ওপর পরীক্ষা করে দেখা গেছে যারা কৃত্রিম সুগন্ধকারক এবং প্রতিরোধক জীবাণুসম্পন্ন দুপুরের খাবার খায় না তাদের ১৪ ভাগই বুদ্ধিমত্ত্বায় অন্য অনেক শিশু যারা ওপরোল্লিখিত খাবার খায় তাদের তুলনায় ভালো করে।
৩৯. সমুদ্র থেকে প্রাপ্ত খাবার: ২০০৩ সালের মার্চ ডিসকভার পত্রিকার ৭ বছরের এক প্রতিবেদনে দেখা যায় যারা সমুদ্রের খাবার সপ্তাহে অন্তত একবার খায় তারা অন্য শিশুদের তুলনায় ৩০% কম মতিভ্রষ্টতা বা উন্মত্ততা রোগে আক্রান্ত হয়।
৪০. কাতুকুতু দেয়া: আপনি নিজে নিজেকে কাতুকুতু বা সুরসুরি দিতে পারবেন না কারণ আপনার মস্তিষ্ক আপনার স্পর্শ এবং অন্য কারও স্পর্শের পার্থক্য করতে পারে।
৪১. কল্পিত খেলার সাথী: অস্ট্রেলিয়ার এক গবেষণায় প্রমাণিত যে, যারা কল্পিত খেলার সাথী নিয়ে খেলা করে তারা অন্যদের তুলনায় বেশি আদর যত্ন বা সোহাগ যা প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে ঘটে সে রকমভাবে বড় হয়।
৪২. মুখের অভিব্যক্তি বুঝতে পারা: কোনো কথা ছাড়াই আপনি অন্যের সুখের অভিব্যক্তি বুঝতে পারবেন যেমন সে কি খুশি অথবা দুঃখিত কিংবা রাগান্বিত। মস্তিষ্কে অ্যামাগডালা নামক একটি ছোট অঞ্চল আছে যার মাধ্যমে আপনি অন্যের অভিব্যক্তি কোনো কথা ছাড়াই বুঝতে পারবেন।
৪৩. কানে শব্দ শোনা: অনেক বছর আগে ডাক্তাররা মনে করত কোনো বস্তুর ঝনঝনে শব্দ থেকে আমরা কানে শব্দ শুনতে পাই কিন্তু নতুনতম তথ্য হচ্ছে এই যে আমাদের শ্রবণশক্তির জন্যও মস্তিষ্কই দায়ী।
৪৪. পুরুষ এবং মহিলার আঘাতপ্রাপ্তিতে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া: বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে, পুরুষ এবং মহিলারা আঘাতে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখায় যা প্রমাণ
করে কেন তারা দুঃখজনক ঘটনার ভিন্ন ব্যাখ্যা প্রদান করে।
৪৫.স্বাদ আস্বাদনে বিশেষত্ব: একটা শ্রেণী আছে যাদের জিহ্বায় বিভিন্ন স্বাদ আস্বাদনকারী গ্রন্থি রয়েছে যার ফলে তাদের মস্তিষ্ক খাদ্য এবং পানীয়ের
ক্ষেত্রে বেশি প্রতিক্রিয়াশীল। এমনকি তারা বিভিন্ন গন্ধের পার্থক্য করতে পারে যা অন্যরা পারে না।
৪৬. ঠাণ্ডা: কিছু ব্যক্তি আছে যারা ঠাণ্ডার প্রতি বিশেষ প্রতিক্রিয়াশীল এবং ঠাণ্ডায় অসুস্থবোধ করে। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা প্রমাণ করে তাদের দেহে এমন কিছু যোগাযোগ গ্রন্থি আছে যা মস্তিষ্কে খবর পাঠায় যে তাদের শীত লাগছে।
৪৭. সিদ্ধান্ত গ্রহণ: মহিলারা সিদ্ধান্ত গ্রহণে পুরুষ অপেক্ষা বেশি সময় নেয় কিন্তু সিদ্ধান্ত পালনে তারা পুরুষ অপেক্ষা বেশি দৃঢ় কারণ পুরুষেরা সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর অনেক ক্ষেত্রেই পালনে বেশি হেরফের করে ফেলে।
৪৮. ব্যায়াম: কিছু পরীক্ষা প্রমাণ করে যখন কোনো ব্যক্তি বেশি কাজে আগ্রহী আর কখনো কোনো ব্যক্তি একেবারেই অলস তা নির্ধারণ করে কেন কারও জন্য সকালে ঘুম থেকে ওঠা এবং ব্যায়াম করা কঠিন এবং কারও জন্য নয়।
৪৯. বিরক্তি: বিরক্তির সৃষ্টি হয় কিন্তু উদ্দীপকের পরিবর্তনের অভাবে যা বেশির ভাগ নির্ভর করে মস্তিষ্ক কীভাবে কোনো কাজকে গ্রহণ করছে এবং যা
মানুষের সহজাত কৌশলের ওপর নির্ভর করে।
৫০. শারীরিক অসুখ: দেহ ও মনের সাথে এক ও অবিচ্ছিন্ন সম্পর্ক রয়েছে। এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে ৫০-৭০% লোকই ডাক্তারের কাছে আসে শারীরিক অসুখ নিয়ে তার কারণ তাদের মানসিক উপসর্গ।
৫১. মন খারাপ এবং কেনাকাটা: গবেষকরা দেখাচ্ছে নীলাঞ্জনারা তাদের দুঃখ কমাতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কেনাকাটা করে। স্মরণশক্তি
৫২. ঘোর মন্থরতা: প্রায়শই ঘোর মন্থরতা আপনার স্মরণশক্তি যা সাধারণত চাপ সহনকারী হরমোনের নিঃসৃত হওয়ার কারণে ঘটে তার কারণ ঘটায়।
৫৩. নতুন যোগাযোগ: প্রত্যেকটি সময় যখন আপনি নতুন কিছু নিয়ে ভাবেন বা পুরনো স্মৃতি রোমন্থন করেন তখন প্রত্যেকবার মস্তিষ্কের সাথে আপনার নতুন যোগাযোগের ক্ষেত্র সৃষ্টি হয়।
৫৪. সম্পর্ক সৃষ্টি: স্মরণশক্তি বিভিন্ন ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত। তাই আপনি যদি কোনো কিছু মনে রাখতে চান বা মনে করতে চান তবে তার সাথে কিছু সম্পৃক্ত করে মনে রাখুন।
৫৫. সুগন্ধি এবং স্মরণশক্তি: স্মরণশক্তি সুগন্ধ দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয়। তাই যারা সুগন্ধিদ্রব্য ব্যবহার করেন তারা বেশি গভীর স্মরণশক্তিমূলক আবেগ পেতে সক্ষম হন।
৫৬. স্মরণশক্তির ব্যাহত তৎপরতা: অ্যাগোসিনা হচ্ছে এমন একটি শব্দ যখন আপনি কোনো একটি শব্দ জানেন এবং যা আপনার জিহ্বার ডগায় কিন্ত যখন আপনার বলা দরকার তখন মনে আসি আসি করেও আসছে না।
৫৭. ঘুম: যখন আপনি ঘুমিয়ে থাকেন তা হচ্ছে আপনার সবচেয়ে ভালো সময় যা আপনাকে সারা দিনের ক্লান্তি দূর করে সব ঘটনা মনে রাখতে সাহায্য করে।
৫৮. নিদ্রাহীনতা: নিদ্রাহীনতা আপনার মস্তিষ্কের নতুন কিছু সৃষ্টির ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।
৫৯. বিশ্বচ্যাম্পিয়ন: স্মরণশক্তির ক্ষেত্রে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ব্যক্তি যার নাম বেন প্রিডমোর। তিনি মাত্র ৫ মিনিটে ৯৬টি ঐতিহাসিক ঘটনা মনে রাখতে পারতেন এবং ছাব্বিশ দশমিক দুই আট সেকেন্ডে পুরো তাশ হাত সাফল করতে পারতেন।
৬০. ইস্ট্রোজেন এবং স্মরণশক্তি: ইস্ট্রোজেন মস্তিষ্কের স্মরণশক্তির সক্রিয়তা বাড়াতে সাহায্য করে।
৬১. ইনসুলিন: ইনসুলিন দেহের রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করে কিন্তু সম্প্রতিকালে বিজ্ঞানীরা গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করেছেন যে মস্তিষ্কে ইনসুলিন স্মরণশক্তির বৃদ্ধি ঘটাতে সাহায্য করে। ঘুম এবং স্বপ্ন
৬২. ঘুম এবং স্বপ্ন দেখে শুধু যারা স্বপ্ন মনে রাখতে পারে না তারা মনে করে তারা স্বপ্ন দেখে না। আসলে প্রত্যেকে স্বপ্ন দেখে।
৬৩. স্বপ্নের পরিমাপ: বেশির ভাগ লোক ১-২ ঘণ্টা স্বপ্ন দেখে এবং প্রত্যেক রাতে প্রায় ৪-৭টা স্বপ্ন দেখে।
৬৪. চিন্তার অবসাদ: যখন আপনি ঘুমিয়ে থাকেন তখন আপনার মস্তিষ্ক থেকে এমন একটা হরমোন নিঃসৃত হয় যা আপনাকে স্বপ্নের অতল গহ্বরে নিয়ে যায় কিন্তু আপনার সক্রিয় আঙ্গিক ক্রিয়া নিবারণ করে এবং আপনাকে ঘুমের রাজ্যে জড়িয়ে চেতনাহীন বা অবসাদগ্রস্ত করে রাখে।
৬৫. ক্ষয়িত বা হারানো স্বপ্ন: স্বপ্নের ৫ মিনিট পর স্বপ্নের অর্ধেক স্মৃতি লোপ পায়। দশ মিনিট পর স্বপ্নের ৯০ ভাগ লোপ পায়। স্বপ্ন লিখে রাখুন যদি আপনি মনে রাখতে চান।
৬৬. মস্তিষ্কের তরঙ্গ: সমীক্ষা প্রমাণ করেছে যে মস্তিষ্কের তরঙ্গ অধিক সচল থাকে যখন আপনি স্বপ্ন দেখেন এবং যখন আপনি জেগে থাকেন সেই সময় থেকেও।
৬৭. রঙ: কিছু লোক প্রায় ১২ ভাগ লোক সাদা কালো স্বপ্ন দেখে যখন অন্যরা রঙিন স্বপ্ন দেখে।
৬৮. অন্ধ লোকও স্বপ্ন দেখে: স্বপ্ন হচ্ছে দৃশ্যমান কোনো বস্তু অপেক্ষা বেশি কিছু এবং অন্ধ লোকও স্বপ্ন দেখে। অন্ধ লোকটি স্বপ্নে ছবি দেখতে পারে কি না তা নির্ভর করে তারা জন্মকালীন অন্ধ বা জন্মের পর দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে কি না তার ওপর।
৬৯. নাক ডাকা: যদি আপনি নাক ডাকেন তবে আপনি স্বপ্ন দেখেন না।
৭০. স্বপ্নের সময়কাল: স্বপ্নের সময় যদি আপনি জেগে যান তবে আপনি সারা রাত ঘুমালে স্বপ্ন যেটুকু মনে রাখতে পারতেন তা অপেক্ষা বেশি মনে রাখতে পারবেন।
৭১. চিহ্ন: যারা স্বপ্নের মানে জানতে চান তাদের জন্য বলছি স্বপ্ন এমন কিছু উপস্থাপন করে যা আপনি ব্যক্তি জীবনে নন। অবচেতন মন চেষ্টা করে আপনার কাঙ্খিত কোনো কিছুর সাথে সংযোগ ঘটাতে। তাই স্বপ্ন হচ্ছে এক ধরনের সংকেতময় প্রতিবেদন। ৭২. অ্যাডেনোসাইন: ক্যাফেইন দেহে অ্যাডেনোসাইন প্রবেশে বাধা দেয় এবং সতর্কতা সৃষ্টি করে। বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন যে এই ক্যাফেইন না খাওয়া স্বাভাবিক নিদ্রা এবং ইনসমনিয়া বা নিদ্রাহীনতা কমাতে সাহায্য করে।
৭৩. স্বপ্ন প্রদর্শনী: জাপানের গবেষকরা আবিষ্কার করেছেন এমন এক যন্ত্র যা মনের চিন্তাভাবনার চিত্র দেখতে এমনকি স্বপ্নকে ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে দেখাতে সক্ষম। সভ্যতার এক বিস্ময়কর তথ্য
৭৪. উড়োজাহাজ এবং মাথাব্যথা: একটি গবেষণা প্রমাণ করেছে উড়া এবং মাথাব্যথার মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। বলা হয়েছে যারা প্লেন চালায় তাদের মধ্যে ৬ ভাগ লোক বেশি মাথাব্যথায় আক্রান্ত হয় যারা উড়োজাহাজে ভ্রমণ করছে তাদের অপেক্ষা।
৭৫. হাত সাফাই: ভোজবাজি বা জাদু দেখানো মস্তিষ্কের পরিবর্তন আনতে পারে সাত দিনের চেয়েও কম সময়ে। সমীক্ষণ দেখিয়েছে নতুন কিছু শেখা মস্তিষ্কে খুব দ্রুত পরিবর্তন আনতে পারে।
৭৬. ডিজনি এবং ঘুম: স্লিপ মেডিসিন নামক একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে যে কীভাবে মায়া ডিজনি খেলায় বিভিন্ন প্রাণীদের দিয়ে তাদের ঘুমের বিচ্ছেদ ঘটিয়ে খেলার নানা কৌশল শেখাতে গিয়ে।
৭৭. চোখ টেপা: প্রত্যেক সময় আমরা চোখের পাতা ফেলি এবং মস্তিষ্ক এটা করে এবং সব সময় সব কিছু দৃশ্যমান রাখাও যাতে পুরো পৃথিবী আমাদের সামনে অদৃশ্য না হয় যখন আমরা চোখের পাতা ফেলি। আমরা দিনের ভেতর প্রায় বিশ হাজার বার চোখের পাতা ফেলি।
৭৮. হাসি: কোনো কিছু শুনে বা দেখে হাসি পাওয়া এত সোজা নয়
কারণ এর জন্য মস্তিষ্কের ৫টি
অঞ্চলকে সক্রিয় হতে হয়।
৭৯. হাই সংক্রামক: কখনো লক্ষ
করেছেন আপনার হাই তোলার পর
আপনার চারপাশের লোকজন কী
করছে? দেখা যাবে তারাও হাই
তুলছে। কারণ বিজ্ঞানীরা
বিশ্বাস করেন এটা প্রাচীন
মানুষের সামাজিক আচরণের একটি
অংশ।
৮০. মস্তিষ্কের সংরক্ষণ: হার্ভার্ড
প্রায় ৭০০০ মস্তিষ্কের সংরক্ষণ
করেছেন।
৮১. বাহ্যিক এলাকা: মহাবিশ্বের
ঘনত্বের হেরফের মস্তিস্ককে
বিভিন্ন উপায়ে আঘাত করে।
বিজ্ঞানীরা গবেষণা করছেন
কীভাবে এবং কেন মানুষ চাঁদে
পা রাখতে চায়।
৮২. গান: গান শুনলে বড় এবং ছোট
উভয়ের মস্তিষ্কের ক্রিয়াশীলতা
বুদ্ধি পায়।
৮৩. চিন্তা: মানুষের চিন্তা যা
তারা বিশ্বাস করে তার সম্মুখীন হয়
তারা প্রায় ৭০,০০০ বার।
৮৪. সব্যসাচী: যারা বামহাতি বা
সব্যসাচী তাদের মস্তিষ্কের দুটি
খণ্ডের সংযোজক অঙ্গ যার নাম
করপাস কোলোসাম যেটি ১১ ভাগ
বেশি চওড়া ডানহাতি লোকদের
তুলনায়।
৮৫. চাপসম্পন্ন কাজ: একটি সমীক্ষণে
দেখা যায় প্রথমে হিসাবরক্ষক,
তারপর লাইব্রেরিয়ান, তারপর বাস
ও ট্রাকচালক সবচেয়ে বেশি
মাথাব্যথায় ভুগে থাকে।
৮৬. অ্যারিস্টটল: অ্যারিস্টটল ভুলবশত
ভেবেছিলেন মস্তিষ্কের সব কাজ
হৃৎপিণ্ডে ঘটে।
৮৭. স্বজাতি ভক্ষণ: কিছু পরীক্ষা
প্রমাণ করেছে যে, মানুষের দেহে
এমন কিছু জিন রয়েছে যা তাদের
স্বজাতি ভক্ষণ রোগ থেকে দূরে
রাখে। এ থেকে ধারণা করা হয় যে
আদিকালের মানুষ তাদের
নিজেদের মাংস ভক্ষণ করত।
৮৮. শেক্সপিয়ার: ব্রেইন শব্দটি
শেক্সপীয়রের শেক্সপিয়ার প্রায়
৬৬ বার ব্যবহার করেছিলেন।
৮৯. আলবার্ট আইনস্টাইন:
আইনস্টাইনের মস্তিষ্কের আকার
সাধারণ মানুষের মস্তিষ্কের
আকারের সমান ছিল। শুধু মস্তিষ্কের
যে অংশ গণিত এবং তৎসংশ্লিষ্ট
কাজে নিয়োজিত সেটি আকারে
ভিন্ন ছিল। ওই অংশটি প্রায় ৩৫ ভাগ
চওড়া ছিল সাধারণ মানুষের
তুলনায়।
৯০. লন্ডনের টেক্সি ড্রাইভার:
লন্ডনের টেক্সি চালকরা বিখ্যাত
ছিল লন্ডনের মতো বিশাল এলাকায়
রাস্তাঘাট চেনার জন্য। তাদের
মস্তিষ্ককে বলা হতো
হিপোক্যাম্পাস বা বিশাল অঞ্চল।
বিশেষত যারা অনেক দিন ধরে
টেক্সি চালায়। এ জন্য যারা বেশি
মনে রাখতে চায় তাদের মস্তিষ্ক
ক্রমান্বয়ে বড় হতে থাকে।
৯১. সপ্তম লেনিন: লেনিনের মৃত্যুর পর
তার মস্তিষ্ক পরীক্ষা করে দেখা
গেছে তার মস্তিষ্ক
অস্বাভাবিকভাবে বড় এবং কিছু
অংশে অসংখ্য নিউরন রয়েছে যা
ব্যাখ্যা দান করে তার তীব্র এবং
আক্রমণাত্মক তীক্ষ্ন অত্যাচারী
মনোভাবের এবং যার জন্য তিনি
বিখ্যাত।
সবচেয়ে পুরাতন মস্তিষ্ক
৯২. পুরাতন মস্তিষ্ক: ইংল্যান্ডের
উত্তরাঞ্চলের নিউইয়র্ক
বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ২০০০ বছর
পুরানো মস্তিষ্কের সন্ধান পাওয়া
গেছে।
৯৩. বেব রুথ: কলম্বিয়ার
মনোবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের
দুজন ছাত্র বেবের মস্তিষ্ক পরীক্ষা
করে দেখেছে যে,এতে প্রায় ৯০
ভাগ বেশি কাজের দক্ষতা
সম্বন্ধীয় বস্তু রয়েছে যা সর্বাধিক
মানুষের থাকে ৬০ ভাগ।
৯৪. ডানিয়েল ট্যামেট: ডানিয়েল
ট্যামেট যে ছিল আত্মসংবেদী
পণ্ডিত তার তিন বছর বয়সে মৃগী
সংক্রান্ত অপারেশন ঘটে। তিনি
তিন বছর বয়স থেকে গণিতে
পারদর্শী ছিলেন এবং সাতটি
ভাষা জানতেন এবং নিজে
নিজে শব্দ বা ভাষা সৃষ্টিতে সক্ষম
ছিলেন।
৯৫. কেউথ জ্যারেট: এই যাজক এবং
গায়ক তিন বছর বয়স থেকে নিখুঁত ধর্ম
উপদেশ দিতে পারত এবং
বিজ্ঞানীরা তার মস্তিষ্ক
পরীক্ষা করে দেখেছিল যে তার
মস্তিষ্কে ডান দিকের সম্মুখ ভাগ
কিছুটা উঁচু ছিল।
৯৬. ২০০০ অব্দ: নৃবিজ্ঞানীরা প্রমাণ
পেয়েছেন যে ওই সময়ে মস্তিষ্কের
খুলিতে ছিদ্র করার মাধ্যমে
অস্ত্রোপচার করা হতো
৯৭. ১৮১১: স্কটিশ সার্জন চার্লস বেল
ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে প্রতিটি
অনুভূতির একটি যোগাযোগ কেন্দ্র
রয়েছে মস্তিষ্কে।
৯৮. ১৮৯৯: অ্যাসপিরিন নামক ওষুধটি
ব্যথা নিবারক হিসেবে
বাজারজাত হয়েছিল কিন্তু
ডাক্তারের নির্দেশ ছাড়া এটি
নিষিদ্ধ ছিল ১৯১৫ সাল পর্যন্ত।
৯৯. ১৯২১: হারমান রোরসাচ
আবিষ্কার করেছেন বিখ্যাত ইনক
ব্লট পরীক্ষা।
১০০. ১৯৫৯: প্রথম ক্ষুদ্র লেজবিশিষ্ট
বানর মহাশূন্যে পাঠানো হয়েছিল
মানুষের আচরণ পরীক্ষার জন্য।