অগণিত পরিবারে পিতৃশূণ্যতার আহাজারি যেমন পরিলক্ষিত তেমনি ভাইয়ের জন্য কাঁদছেন অগণিত বোনেরা। বোনেরা আদর সোহাগে ভাইদের বড় হতে সহায়তা করে থাকে। কিন্তু ছোট বেলা থেকেই সে ভাইদের অবহেলার পাত্র হয়েই বোনদের বেঁচে থাকার দুঃখজনক পরিস্থিতি এখনো বদলায়নি।
নারী জাগরণে, ক্ষমতায়নে আর উন্নয়নে শেখ হাসিনার আমল অদ্বিতীয়। এমন নারী মর্যাদার সেরাক্ষণেও শোনা যায় অগণিত নারীদের আহাজারি। এখনো ৭ বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধা ধর্ষণের খবর আসে মিডিয়ায়। পিছিয়ে থাকা নারীদের স্থায়ী উন্নয়ন পরিকল্পনা ও তার বাস্তবায়ন এখনও না হলে আর কোনোকালে সম্ভব হবে কি?
ভিজিটিং কার্ড আত্মপ্রকাশের অন্যতম মাধ্যম জানা থাকলেও বেশ কিছুদিন যাবৎ রাজধানীর ফুটপাতে ভিজিটিং কার্ডের ছড়াছড়ি চোখে পড়ছে। কার্ডগুলোতে নামের ভিন্নতা থাকলেও ৩টি বিশেষ মিল চোখে পড়ে। ১) নামের পড়ে ভাই শব্দটি প্রত্যেকটি কার্ডে পরিলক্ষিত ২) প্রতিটি কার্ডের রং হলুদ এবং ৩) প্রায়সব কার্ডের ঠিকানা রাজধানীর মিরপুর শেওড়া পাড়া। এমন হলুদ কার্ড ছয়লাবে একজন পথচারি বলেও ফেললেন- শেওড়া পাড়া না লিখে এখন শেওয়া পাড়া লিখলেই পারে। শুধু শেওড়া পাড়াই নয়; ভাইদের দ্বারা উত্তরার মতো রাজধানীর বিভিন্ন দিকে চলছে বোনদের দেহদোকানদারি।
ফার্মগেট থেকে কাওরান বাজারের দিকে হেটে যেতেই কয়েকটি হলুদ কার্ড হাতে তুলে নিয়ে একটি কার্ডের নাম্বারে ফোন দেওয়া মাত্র রিসিভ করল কার্ডে উল্লেখিত ভাই। রুমের দাম জিজ্ঞাস করতেই বলল- সাথে নিয়ে আসবেন নাকি আমাদের থেকে নিবেন?
তথ্য সংগ্রহের স্বার্থে আরো একটি কার্ড হাতে নিয়ে কল দিলে একই কথা আসে ভাইদের কাছ থেকে। যে ভাইরা বোনদের সম্ভ্রম বিক্রির প্রচারে রাজধানীর অলিগলিতে হলুদ ছড়িয়ে দিচ্ছে প্রতিদিন। আমন্ত্রণ জানাচ্ছে এসি নন এসি রুমে গার্লফ্রেন্ড নিয়ে কিংবা তাদের বোনদের সেবা নিতে।
সমাজ আর সভ্যতার বুকে কুঠারাঘাত দিয়ে রাজধানীতে ভাইদের দ্বারা বোনদের দেহদোকানদারি চলছে। এতে অনেকে তেমন কোনো সমস্যা মনে না করলেও এই সেবা বিস্তারে ভেঙ্গে পড়বে হাজার বছরে গড়ে ওঠা বাংলার পারিবারিক অবকাঠামো। রাষ্ট্রের একক পরিবার থেকে হারিয়ে যাবে ঐক্য, ঐতিহ্য ও স্নেহ-মমতার বন্ধন। পিতামাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্যজ্ঞান হারাবে নতুন প্রজন্ম। সামান্য কিছুতে বিধ্বংসী কর্মকান্ড ঘটাতে দ্বিধাবোধ করবেনা। পথে ঘাটে মিলবে অপরিণত নব জাতক আর সুশৃঙ্খল পরিবেশ পাওয়ার প্রত্যাশা ক্ষীণ হয়ে যাবে। এমনটাই আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞ মহল।