বিগত কয়েক জুমার নামাজ পড়তে গিয়ে লক্ষ্য করছি- চুরি যাওয়ার ভয়ে মুসল্লিরা তাদের যেসব পঞ্চের সেন্ডেল হাতে নিয়ে মসজিদের ৪/৫তলা বেয়ে ওঠেন এবং তা বাক্সের ভিতরে, পিলারের পাশে এমনকি সিজদার সামনে যত্ন সহকারে রাখেন; তার দাম ৫০ থেকে ৫০০ টাকার উর্ধ্বে নয়।
রাস্তার ধুলাবালি ও কফথুথুসহ নানা ধরনের নাপাকি এমনকি প্রস্রাব পায়খানা থেকে ঘুরে এসে সেন্ডেলজোড়া হাতে নিয়ে সোজা মসজিদের ভিতরে ঢুকে পড়েন। এটাই স্বাভাবিক; এতে কারো আপত্তি করার কিছু নেই। সেই সেন্ডেল থেকে ফোটা ফোটা পানি মসজিদের ভিতরে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যপারে বিপত্তি নিয়ে আজকের এই লেখা।
প্রথম কথাঃ চোরমুক্ত সমাজ গড়ায় আমরা কেন সফল হতে পারছিনা? দেশ এখন ভিক্ষুকমুক্ত বলে ঘোষণা দিলেও চোরমুক্তির উপায় খুঁজে পাচ্ছিনা। আর এটাই সত্য মসজিদের সামনে ৫ হাজার টাকার জুতা পড়ে থাকলেও যেদিন কেউ আর তার দিকে ফিরে তাকাবার থাকবেনা সেই দিনই হবে চোরমুক্ত বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় কথাঃ চোরমুক্ত সমাজ গড়ার কাজ মসজিদ থেকেই শুরু হওয়ার কথা। খোলাফায়ে রাশেদীনের আমলে মসজিদ কেবল ৫ ওয়াক্তের নামাজের জন্য নয়; বিচারালয় ও সংসদ অধিবেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালিত হতো। এক জুমা থেকে আরেক জুমার মধ্যে মসজিদে খয়রাতের পয়সার অংক মাইকে জানিয়ে দিয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ কমিটির কাছে সাধু সাজেন যেই ইমাম সাহেব; তিনি আল্লাহর কাছে ভালো হওয়ার জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এক জুমা থেকে আরেক জুমা পর্যন্ত জুতাচোর কমিয়ে আনার সাফল্যের ঘোষণা কেন দিতে পারছেন না? শতশত সৎ ও ইমানদার মুসল্লিদের ৫ ওয়াক্ত নামাজের ইমামতির মধ্যেই কি তার দায়িত্ব শেষ?
তৃতীয় কথাঃ বাংলাদেশে সবার আগে কোন জেলার কোন মসজিদটি জুতাচোরমুক্ত ঘোষণা করতে পারবেন কোন ইমাম সাহেব? সে সংবাদের অপেক্ষায় আমরা জাতীয় সংবাদ সংগ্রহ সংস্থা এনএনসি ও সংগ্রহ বার্তা পরিবার। যেই মসজিদে মহান আল্লাহর সেজদার জায়গায় পঞ্চের সেন্ডেলের পচা পানির ফোটা পড়বেনা আর ছ্যাচড়া চোরের ভয়ে।