জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৪ জুন ১৯৫৭ খ্রিঃ থেকে ২৩ অক্টোবর ১৯৫৮ খ্রিঃ পর্যন্ত প্রথম বাঙালি হিসাবে চা বোর্ডের চেয়ারম্যান পদে অধিষ্ঠিত থেকে বাঙালি জাতিকে সম্মানিত করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর জন্মশতবার্ষিকীতে চা শিল্পে তাঁর অসামান্য অবদান ও চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে তাঁর যোগদানের তারিখ ৪ জুনকে স্মরণীয় করে রাখতে এবং দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে চা শিল্পের ভূমিক কে বিবেচনায় নিয়ে ‘জাতীয় চা দিবস’ উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আজ ‘জাতীয় চা দিবস-২০২২’উদযাপন উপলক্ষে চায়ের রাজধানী মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলে বর্ণাঢ্য র্যালী, আলোচনা সভা, চেক বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজার মীর নাহিদ আহসান।
চা শিল্পে বঙ্গবন্ধুর স্পর্শ আছে। তিনি চা শিল্পের উন্নয়নের জন্য অনেক যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি চা বাগানের শ্রমিকদের নাগরিকত্ব ও ভোটের অধিকার প্রদান করেন। বর্তমান সরকারও এ বিষয়ে সচেতন রয়েছে, চা শিল্পের উন্নয়নে কাজের ধারা অব্যাহত রেখেছে। ১৯৭০ সালে যেখানে চায়ের উৎপাদন ছিল মাত্র ৩ কোটি ১৩ লাখ কেজি, সেখানে বাংলাদেশ চা বোর্ডের হিসেবে ২০২১ সালে দেশের ১৬৭টি চা বাগান এবং ক্ষুদ্র উদ্যোগ থেকে ৯ কোটি ৬৫ লাখ ৫ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। আর এসব চায়ের প্রায় ৭০ ভাগ উৎপাদন হয় মৌলভীবাজারের ৯২টি চা বাগানে।
চায়ের ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ, রফতানি বাজার সম্প্রসারণ, গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদন বৃদ্ধি, চা শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার ‘উন্নয়নের পথ-নকশা: বাংলাদেশ চা শিল্প’ প্রণয়ন করেছে। এ পথ-নকশা ২০১৭ সালে সরকার অনুমোদন করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশ ১৪০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদনের মাধ্যমে বিশ্বে শীর্ষ চা উৎপাদনকারী দেশের তালিকায় নাম লেখাতে চায়।
আজকের অনুষ্ঠানটির সভাপতি মীর নাহিদ আহসান বলেন, মৌলভীবাজার জেলার জেলা ব্র্যান্ডিং ট্যাগলাইন হলো ‘চায়ের দেশ মৌলভীবাজার’ আর শ্রীমঙ্গলকে বলা হয় ‘চায়ের রাজধানী’। আর তাই চা শিল্পের উন্নয়নে সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ সফলভাবে বাস্তবায়নের জেলা প্রশাসকের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ‘টি-সেল’ নামক একটি স্বতন্ত্র ইউনিট কাজ করে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসন মৌলভীবাজার চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি অংশীজনের কার্যক্রম সমন্বয়ের মাধ্যমে ২০৩০ সালের এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং ২০৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ গড়ার জন্য নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।