৩ মে মঙ্গলবার যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য এবং উৎসাহ, আনন্দ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সারা দেশে মুসলমানরা ঈদুল ফিতর উদ্যাপন করছেন। সর্বত্রই শোনা যাচ্ছে নজরুলের চিরচেনা গানের সুর, ‘ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশীর ঈদ’
মহামান্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এক বাণীতে বলেন, ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই যাতে ঈদের আনন্দ সমানভাবে উপভোগ করতে পারে, সেই জন্য মানবতার মুক্তির দিশারি হিসেবে ইসলামের মর্মার্থ ও অন্তর্নিহিত তাৎপর্য দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ুক, বিশ্ব ভরে উঠুক শান্তি আর সৌহার্দ্যে—পবিত্র ঈদুল ফিতরে এটাই তাঁর প্রত্যাশা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসী ও বিশ্বের সব মুসলমানকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ঈদ মোবারক জানিয়েএক বাণীতে বলেন, ‘ঈদ শান্তি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধের অনুপম শিক্ষা দেয়। হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানি ভুলে মানুষ সাম্য, মৈত্রী ও সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ হয়। ঈদ ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের জীবনে আনন্দের বার্তা বয়ে নিয়ে আসে। ঈদের আনন্দ আমাদের সবার।’
বিশ্ববাসীর শান্তি কামনায় জাতীয় সংবাদ সংগ্রহ সংস্থা এনএনসির প্রেসিডেন্ট মাসুম বিল্লাহ বলেন, যদ্দিনে না পৃথিবীতে সমান অধিকার নিশ্চিত না হবে ততদিনে ইদের পূর্ণ আনন্দের প্রত্যাশা করা অসম্ভব। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের গৃহপালিত প্রাণীর জরিপ যতটুকু গুরুত্বের সাথে করা হয়েছে। তারচেয়ে দেশের ক্ষুধার্ত মানুষের জরিপের প্রতি অনেক বেশি উদাসীনতা প্রতীয়মান। রাজনৈতিক বক্তব্যে কেবল ক্ষুধার্তমুক্ত দেশ বলেই ক্ষান্ত হচ্ছেনা বরং ভিক্ষুকমুক্ত বাংলাদেশ বলা হচ্ছে। বাস্তবতা থেকে যতদূরে গিয়ে বক্তব্য দিবে ততই জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে সে বক্তা।
আজকের এই পবিত্র ঈদের নামাজ জামাতে শামিল হয়েছেন যারা; তাদের প্রতিটি পাড়া মহল্লার মসজিদের দুয়ারে দুয়ারে কত অসহায় জীর্ণশীর্ণ বৃদ্ধ, নারী ও শিশু দুই টাকার জন্য হাত বাড়িয়ে থাকার দৃশ্য চোখে পড়েছে। আর অন্তরালের খবর কেউ কি নেয়ার প্রয়োজন মনে করে? যারা অনাহারে অর্ধাহারে থেকেও পরিচ্ছন্ন পোশাকে সামাজ রক্ষা করে আসে। যারা তাদের একান্ত বন্ধুদেরকেও বলতে দ্বিধা করে তার প্রয়োজনের কথা। নীরবে নিভৃতে চোখের পানি ঝরছে যেসব লোকের; তাদের সঠিক পরিসংখ্যান কে দেবে? কার এতো মনের খবর খুঁজে বেড়ানোর দায় রয়েছে?
যেদিন দেশের মানুষ ব্যাংক থেকে প্রায় সমান অংকের টাকা লেনদেন করার সুযোগ পাবে; সেদিন দেশকে স্বাবলম্বী ও স্বনির্ভর বলে ঘোষণা দিলে তা গ্রহণযোগ্য হবে। এর মানে এই নয় যে, সবাইকে গুলশানের বাড়ির মালিক হয়ে যেতে হবে। তারতম্য থাকবে তবে তা আকাশ পাতাল তফাতের নয়। আসুন আজকের এই খুশির ইদের দিনে আমরা দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে এই শপথ গ্রহণ করি- “প্রতিহিংসা ও সংঘাতের রাজনীতি বন্ধ করি, অভাব ও অপরাধমুক্ত সত্যিকারের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ি”