৬৩২ সালে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) হজ পালন করেন। তারপর থেকে মুসলমানরা হজ পালন করে আসছেন।
৮৬৫ সালঃ প্রথমবার হজ বাতিল হয়েছিল। ইসমাইল ইবনে ইউসুফ আল-সাফাক বাগদাদের আব্বাসি সালতানাতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে আচমকা আরাফাতের ময়দানে হজযাত্রীদের ওপর হামলা করে। কয়েক শ হজযাত্রীর সেখানেই মৃত্যু হয়। এরপর আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে সেবারের হজ বাতিল করা হয়।
৯৩০ সালঃ হজ বন্ধ হয়েছিল। কট্টর শিয়া গ্রুপ কারমাতিদের আক্রমণে সে বছর ৩০ হাজার হাজি শহীদ হয়। তারা হাজিদের হত্যা করে মরদেহ জমজম কূপে ফেলে দেয়, ফিরে যাওয়ার সময় হাজরে আসওয়াদ বাহরাইনে নিয়ে যায়।
৯৬৮ সালঃ মক্কায় একটি রোগ ছড়িয়ে পড়ে এবং বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এ সময় মক্কায় হজযাত্রীদের ব্যবহৃত উটগুলো পানির অভাবে মারা যায়। সেবারও হজ বন্ধ ছিল।
৯৮৩ থেকে ৯৯০ সাল পর্যন্ত হজ বাতিল হয়েছিল রাজনীতির কারণে। ইরাক ও সিরিয়াভিত্তিক আব্বাসীয় খিলাফত এবং মিসরভিত্তিক ফাতেমীয় খিলাফতের মধ্যকার দ্বন্দ্বের কারণে সেবার টানা ৮ বছর হজ বন্ধ ছিল।
১০০০ সালঃ মিসরে ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতির কারণে এবং হজ-খরচ মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় মানুষ হজে যেতে পারেননি।
১০২৬ সালঃ ইরাকে তীব্র ঠান্ডা ও বন্যা শুরু হলে হজযাত্রীদের পক্ষে মক্কায় যাওয়া অসম্ভব হয়ে পড়লে হজ স্থগিত করতে হয়।
১০৯৯ সালঃ যুদ্ধের কারণে মুসলিম বিশ্বজুড়ে ভয় ও নিরাপত্তাহীনতার কারণে কেউ হজ করেননি।
১২৫৮ সালঃ বাগদাদ অবরোধ করে হালাকু খান। অবরোধ বেশ লম্বা ছিল। ভয়ে মানুষ বের হয়নি। সেবার উমরা ও হজ বন্ধ করা হয়। হালাকু খান শুধু বাগদাদে দুই মিলিয়ন মানুষকে হত্যা করেছিল।
১৬২৯ সালঃ প্রচণ্ড বৃষ্টি হয় মক্কায়। তখন কাবার দেয়াল ধসে যায়, বন্ধ হয় তাওয়াফ। বন্যা শেষে গ্রানাইট পাথরে নতুন করে কাবা সংস্কার করা হয়।
১৭৯৯ সালঃ ফরাসি বিপ্লবের সময় নিরাপত্তার খাতিরে হজের কাফেলাগুলোকে মক্কায় যেতে দেওয়া হয়নি।
১৮১৪ সালঃ হেজাজ প্রদেশে প্লেগের কারণে ৮ হাজার মানুষ মারা যাওয়ায় হজ বাতিল করা হয়।
১৮৩১- ১৮৪০ সালঃ প্লেগের কারণে লাগাতার হজ বন্ধ থাকে।
১৮৫৮ সালঃ আরেকটি বৈশ্বিক কলেরা মহামারি মক্কায় ছড়িয়ে পড়ে। অধিকাংশ ঐতিহাসিকদের মত, এ মহামারি মক্কায় আসে ভারতীয় হজযাত্রীদের মাধ্যমে। ভারতীয়দের থেকে অন্যান্য দেশের হজযাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। কলেরার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য মিসরীয় হজযাত্রীরা লোহিত সাগরের দিকে পালিয়ে যান। সেখানে তাঁদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। তারপর বিরতি দিয়ে আবারও ১৮৬৫ ও ১৮৮৩ সালে ফিরে আসে কলেরা। এ জন্য বারবার হজ স্থগিত রাখতে হয়।
১৯৮৭ সালঃ ইরানি হাজি কাবা চত্বরে ইসরায়েল-আমেরিকা বিরোধী বিক্ষোভ করলে সৌদি পুলিশ আর ন্যাশনাল গার্ড তাতে বাধা দেয়। এরপর সংঘর্ষে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। তখন কাবার তাওয়াফ বন্ধ করা হয়।
২০২০-২০২১ সালঃ করোনার জন্য হজ বাতিল করা হয়েছিল।
২০২২ সালে বাংলাদেশ থেকে ৫৭ হাজার ৮৫৬ জন হজে যাওয়ার অনুমোদন পেয়েছেন।