বার্লিন, ২৮ মার্চ ২০২২ঃ
এক বর্ণাঢ্য ও জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনে বার্লিনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২২ এর দ্বিতীয় পর্ব উদ্যাপিত হয়েছে। গতকাল ২৭ মার্চ ২০২২ তারিখ, রোববার সন্ধ্যায়, স্থানীয় পাঁচতারা হোটেল ওয়াল্ডর্ফ এস্টোরিয়া-তে বাংলাদেশ দূতাবাস-বার্লিন কর্তৃক আয়োজিত এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে বার্লিনস্থ প্রায় ২৫টি দূতাবাসের মিশনপ্রধান ও কূটনীতিক, জার্মানির পররাষ্ট্র দপ্তর, বৈদেশিক বাণিজ্য, অর্থনৈতিক বিষয়াবলী ও জলবায়ু পরিবর্তন দপ্তরের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন থিংক ট্যাঙ্ক প্রতিনিধি, অনারারি কনসালবৃন্দ, জার্মান ব্যবসায়ী সহ প্রবাসী বাংলাদেশী বিভিন্ন গুণীজন, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ী ও কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ এবং দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ যোগদান করেন। শতাধিক মানুষের উপস্থিতিতে উক্ত আয়োজনে আমন্ত্রিত সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী।
করোনা পরবর্তীতে সকলের জন্য সশরীর উপস্থিতিতে এই জাঁকজমকপূর্ণ মিলনমেলার আয়োজন করায় উপস্থিত সকলে মান্যবর রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানান। বাংলাদেশ ও জার্মানি এই দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজিয়ে ও যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের প্রেক্ষাপটে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, মহান নেতা ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ ও জীবিত মুক্তিযোদ্ধা, সকল বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা মা-বোনের অপরসীম ত্যাগ-তীতিক্ষার কথা উল্লেখ করে বিশেষ এই দিনে তাঁদের সকলকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করা হয়। মান্যবর রাষ্ট্রদূত জনাব মোঃ মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, এনডিসি তাঁর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে উপস্থিত সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে স্বাধীনতা পরবর্তীতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অর্জন এবং বর্তমান সরকারের গৃহীত বিবিধ উন্নয়ন কর্মসূচীর ফলে বাংলাদেশ কিভাবে আজ “উন্নয়ন বিস্ময়” হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিতি লাভ করেছে, সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব সহকারে আলোকপাত করেন। কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পেরিয়ে বাংলাদেশ ও জার্মানির মাঝে বিদ্যমান বন্ধুত্ব ও আন্তরিক সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি এই সম্পর্ককে আরো গভীর ও উত্তরোত্তর বৃদ্ধির প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। উক্ত আয়োজনে আমন্ত্রিত সম্মানিত অতিথি হিসেবে আগত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. গওহর রিজভী উপস্থিত সকলকে ও দূতাবাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন যে বাংলাদেশের অদম্য অগ্রযাত্রাকে কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না। স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা ও অবদান এবং বর্তমান সরকারের দেশ পরিচালনায় প্রভূত অর্জনের কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি মিয়ানমার হতে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ও বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর নিরাপদ প্রত্যাবাসন বিষয়ে তিনি আগত সকল কূটনীতিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের বিশেষ কেক কাটার পর অনুষ্ঠানের আকর্ষণীয় সাংস্কৃতিক পর্ব শুরু হয়। জার্মানিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিদের নিজস্ব আয়োজনে স্বাধীনতা বিষয়ক গান, নাচ, কবিতা, পুঁথিপাঠ ও ভিডিওচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে আয়োজিত এই বর্ণাঢ্য পর্ব সকলে মুগ্ধতার সাথে উপভোগ করেন। অনুষ্ঠানের শেষাংশে আগত অতিথিবৃন্দ বাংলাদেশি খাবার ও মিষ্টি সহ বুফে ডিনারে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে মিজানুর হক খান , মাসুদ রহমান, নূরজাহান খান নূরী, নূরে আলম সিদ্দিকি রুবেল, মোবারক আলী ভঁূইয়া, ইউনুস আলী খান উপস্থিত ছিলেন। পরিশেষে দূতাবাসের এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।