ছোটবেলা থেকে যার সংবাদ পাঠ শুনে বড় হয়েছি, যার কন্ঠের যাদুতে মুগ্ধ হয়ে যেতাম সেই দিলারা হাসেম আজ না ফেরার দেশে চলে গেলেন (ইন্নালিলাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন)
ভয়েস অফ আমেরিকার কথা আসলেই দিলারা হাসেমের কথা চলে আসে। দীর্ঘদিন ধরেই আমেরিকায় আছেন, (কয়েক যুগ হবে।) আমার আম্মার খুব পছন্দের মানুষ ছিলেন। শুধু সংবাদ পাঠ না , সাহিত্যিক ও ছিলেন। যে যুগে মেয়েরা সমাজের নিষেদের বেড়াজাল ছিন্ন করার সাহস ছিল কম, তখন এই দিলারা হাসেমরা এগিয়ে গেছেন শিক্ষার আলো নিয়ে। সাহসিকতার সাথে নিজের অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছেন। যোগ্যতার মাপকাঠিতে যে কোন অংশে কম নয় তা প্রমান করেছেন কাজের মধ্য দিয়ে। আমার আম্মা দিলারা হাসেমের উপন্যাস গুলো ও পড়তেন । তাঁর বিখ্যাত উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে , ঘর মন জানালা( ১৯৬৫), একদা এবং অনন্ত (১৯৭৫), স্তবদ্ধতার কানে কানে( ১৯৭৭), আমলকির মউ(১৯৭৮), শঙ্খ করাত (১৯৯৫)। বাদামি বিকালের গল্প (১৯৮৩) মুরাল ( ১৯৮৬) , শঙ্খ করাত ( ১৯৯৫) সেতু ( ২০০০), মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস সহ আরো অনেক লেখা গল্প, কবিতা আছে। দিলারা হাসেম ১৯৭৬ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছিলেন।
দিলারা হাশেমের জন্ম ১৯৩৬ সালে। তিনি ১৯৫৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। এমন গুণী মানুষের চলে যাওয়া আমাদের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। সমাজের স্তরে স্তরে এখন নকল ধব্জাধারি মানুষের আনাগোনা । সেখানে দিলারা হাসেমরা ছিলেন আপন আলোয় আলোকিত, যে সমাজকে ও আলোকিত করেছে।