শহর সংবাদদাতা: মিষ্টি রোদের সকাল। চাষাঢ়া থেকে মিশনপাড়ামুখী রাস্তায় ঢুকতেই ঢাকঢোলের আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল। বিরামহীন ঢোলের আওয়াজের সঙ্গে থেমে থেমে বেজে উঠছে ঘণ্টা আর কাঁসার শব্দ আর নানা বয়সের নারীদের ভক্তিভরা উলুধ্বনি। এরই মাঝে পিতার কোলে চড়ে মÐপে অধিষ্ঠিত হলেন ‘কুমারী মা’। হাজারো ভক্ত জয়ধ্বনি দিয়ে বরণ করে নেন ‘কুমারী মা’ ঐশী চক্রবর্তীকে। রবিবার (০৬ অক্টোবর) দুপুুরে নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনে উৎসবমুখর পরিবেশে ও নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে এ কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হয়।
টুকটুকে লাল শাড়ি পরে আসা কুমারী মায়ের চোখে-মুখে ভীতিমিশ্রিত আনন্দের ছাপ। চারদিকে তখন অগণিত মানুষের ভিড়। কুমারী মা আসনে আসার পর পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী এবারের কুমারী মা ঐশী চক্রবর্তীর বাবা পরিমল চক্রবর্তী এবং মা মিতা চক্রবর্তী। ২০০১ সালে জন্ম নেওয়া ঐশী ভক্তদের পূজা গ্রহণ শেষে অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বললেন, ‘সবাই আমাকে দেখতে এসেছে, পুজো দিয়েছে। খুবই ভালো লাগছে।’
কুমারী পূজার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে নারায়ণগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনের মহানরাজ একনাথানন্দ মহারাজ বলেন, নারী জগদ্ধাত্রীর অংশবিশেষ। সমগ্র বিশ্বে তিনি মহামায়ারূপে প্রকাশিত। ঈশ্বরের অনন্ত ভাব। মাতৃভাবেও ঈশ্বরের আরাধনা করা যায়। তাঁর বৈচিত্র্যময় আরাধনার এক বর্ণাঢ্য পর্ব শারদীয় দুর্গোৎসবে কুমারী পূজা।
প্রসঙ্গত, শাস্ত্রমতে এই পুজোর উদ্ভব হয় কোলাসুরকে বধ করার মধ্যে দিয়ে। সে গল্প অনুসারে, কোলাসুর এক সময় স্বর্গ-মর্র্ত্যের অধিকার পাওয়ায় বিপন্ন বোধ করে দেবতারা মহাকালীর শরণাপন্ন হন। তখন দেবতাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে দেবী পুনর্জন্মে কুমারীরূপে কোলাসুরকে বধ করেছিলেন। এরপর থেকেই মর্ত্যে কুমারী পূজার প্রচলন শুরু হয়।
র্যাব-১১’র অধিনায়ক কর্ণেল কাজী শামসের উদ্দিন বলেছেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ শারদীয় দূর্গোৎসব আমরা প্রত্যেকে সজাগ আছি, কোন ধরনের সমস্যা ইনশাল্লাহ্ হবেনা। যদি হয় তাহলে আমাদের জানাবেন, যাতে আমরা দ্রæত ব্যবস্থা নিতে পারি।