নিউজস্বাধীন বাংলা:দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধকে জানি’ মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা অর্জনকারীর সাক্ষাতকার স্বরুপ শিক্ষার্থীদের মাঝে মুক্তিযুদ্ধের অভিজ্ঞতা জানালেন ৭১’র রনাঙ্গনে বীর সেনানী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.ইদ্রিস মিয়া। শনিবার ( ২১ সেপ্টেম্বর ) নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সস্তাপুরস্থ কমর আলী স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের মাঝে এ অভিজ্ঞতা জানালেন এ বীর সৈনিক। সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত দীর্ঘ আড়াই ঘন্টা এ সৈনিককে কাছে মনোযোগের সাথে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস শুনে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদেরকে তিনি বলেন,পাক সেনাদের সাথে দেশের যুদ্ধ হচ্ছে তা শুনে এদিক/ওদিক ছুটোছুটি করতে লাগে অনেক সাধারন মানুষ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্ধিরা গান্ধির নির্দেশে ভারতীয় সেনাবাহিনী আমাদেরকে যে সহযোগিতা করেছে তা বাঙ্গালী জাতি কখন ভুলবে না। পাশাপাশি রাশিয়াও আমাদেরকে সহযোগিতা করে। ৭১’র নভেম্বরের মাঝামাঝি কিছু ভারতীয় সেনাবাহিনী আমাদেরকে সহযোগিতা হাত বাড়িয়ে দিলে আমরা বাঙ্গালী মুত্কি সেনারা আরও বেশী সাহসী হয়ে দাড়াই।
৬ ডিসেম্বর কুমিল্লার চান্দিনা হাই স্কুল ও আমাদের ময়নামতি কেন্টনমেন্ট ঘেড়াও কওে পাক হানাদার বাহিনীরা। চর্তুদিকে বোম্বিং হলেও ভেতরে আমাদের তেমন কোন ক্ষতি করতে পারেনি। কিন্তু পাক সেনারা জানতোনা যে চান্দিনা পুরোটাই ঘেড়াও করে রেখেছে বাঙ্গালী মুক্তিসেনা ও ভারতীয় যোদ্ধারা। সেখানে অনেক প্রচুর পরিমানে ভারতীয় সেনা সদস্য মারা গেলে তাদেরকে সেখানেই দাহ করা হয়। সেদিনের গোলাগুলির পর যুদ্ধ শেষে আমরা সাদা পতাকা উত্তোলন করি। যুদ্ধে হারলেও পাক সেনারা আমাদেরকে তারা কঠোর দৃষ্টিতে ফলো করে।
ক্যান্টমন্টের পাশাপাশি ঢাকাও ঘেড়াও করে পাক সেনারা। সেখানে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা দলে দলে সমাবেত হতে শুরু করে। ৮ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু মুক্তি পান এবং ৯ ডিসেম্বর তিনি লন্ডনের হিথ্রো বিমান বন্দরে উপস্থিত হন সে সময় সেখানে লন্ডনের প্রধানমন্ত্রী এওওয়ার্ড হিথ্র উপস্থিত ছিলেন। ১০ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু বিমানে উঠেন সে সময় তার সাথে ড.কামাল হোসেনও ছিলেন।
১৯৭৫ সালে কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যরা বঙ্গবন্ধুকে তার পরিবারের সকল সদস্যসহ হত্যা করে। এছাড়াও দেশের বুদ্ধিজীবিদেরকে হত্যা করা হয়েছিলো দেশকে মেধাশূন্য ও নেতৃত্ব শূন্য করতে। ৭৫’র পরে মহীদ বুদ্ধিজীবি কবরে শায়িতরা জিয়াকে বলেছিলো,জিয়া তুমি কি করছো স্বাধীনতা বিরোধীদেরকে আশ্রয় দিচ্ছো কিন্তু জিয়া তা শুনেনি।
শিক্ষার্থীদেরকে তিনি আরও বলেন,১৯৪৩ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুসলিম লীগের জন্ম হয় এবং ১৯৫২ সালে তিনি দলটির সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি বলেন,বঙ্গন্ধু মানে অসাম্প্রদায়িক চেতনার আদর্শ। তিনি ৭ মার্চে যে ভাষন দিয়েছেন সেটা বিশ্বে জননন্দিত একটি সর্বকালের সেরা ভাষন হিসেবেই সুপরিচিত। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ৫২’র ভাষা আন্দোলন,৬৬’র ৬ দফা আন্দোলন,৬৯’র গনঅভ্যুথ্থানসহ দেশের অনেক ক্ষেত্রে তার অবদান ভুলবার মত নয়।
পরে শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধ ও শেখ মুজিবুর রহমান সর্ম্পকে নানাবিধ প্রশ্ন করলে তিনি শিক্ষার্থীদেরকে সুন্দরভাবে বুছিয়ে দেন এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ইতিহাস বলা কখনও শেষ হবেনা বলেও জানান শিক্ষার্থীদেরকে।
কুমিল্লা জেলার দেবিদ্ধার উপজেলার বকরীকান্দি গ্রামের আবদুল মজিদের ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো.ইদ্রিস মিয়া। তারা ৩ভাই ও দুই বোন। বর্তমানে পরিবার নিয়ে ফতুল্লা থানাধীন ৪৩/বি পূর্ব ইসদাইরে বসবাস করছেন।