নিউজস্বাধীন বাংলা : ‘কষ্টের টাকায় শ্রেষ্ঠ বাজার’ এমন নীতি বাক্য আউড়িয়ে ভোক্তাদের ঠকিয়েই চলছে স্বপ্ন সুপার শপের নারায়ণগঞ্জের আউটলেট। ভোকা অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে এই প্রতিষ্ঠানটিকে এ পর্যন্ত বেশ কয়েকবারই গুণতে হয়েছে জরিমানা। তারপরও শিক্ষা হয়নি। লঙ্ঘন করেই চলেছে ভোক্তা অধিকার।
নানা ধরণের চাকচিক্যময় বিজ্ঞাপন, বাহারি শ্লোগানে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করাই হচ্ছে স্বপ্নের মূল কাজ। এর অন্তরালে পঁচা, মাংস গছিয়ে দিচ্ছে তারা সাধারণ ক্রেতাদের। আবার কখনো পণ্যের গুণগত মান ঠিক না রেখে খেয়াল খুশি মতো মূল্যও নির্ধারণ করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
ইতোমধ্যে এসব অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের মিশন পাড়ায় অবস্থিত স্বপ্ন সুপার শপের আউটলেটটিকে গুণতে হয়েছে জরিমানা। এমনকি শহরের জামতলায় সম্প্রতি উদ্বোধন হওয়া একই গ্রæপের স্বপ্ন এক্সপ্রেসকেও জরিমানা গুণতে হয়েছে পঁচা মাছ বিক্রির অভিযোগে। তথ্য সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ চাষাড়া মিশন পাড়া এলাকার স্বপ্ন সুপার শপকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমান আদালত। পণ্যের সঠিক মান বজায় না রাখা এবং নিজেদের ইচ্ছে মতো দাম নির্ধারণ করায় তাদের এই জরিমানা করা হয়। ওই ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহাঙ্গীর আলম। তাকে সহায়তা করেন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের সহকারি পরিচালক তাহমিনা বেগম। অপরদিকে চলতি বছরের ৯ মে অপর একটি ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে মিশন পাড়ার স্বপ্নকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। পঁচা মাছ সংরক্ষণ করে বিক্রি ও মসলায় অতিরিক্ত দাম রাখায় তাদেরকে এই জরিমানা করা হয়েছিলো। ওই ভ্রাম্যমান আদাল পরিচালনা করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রহিমা আক্তার, মেজবাহ উল সাবেরিন ও নুসরাত তারা খানম।
এদিকে সর্বশেষ ১৯ আগস্ট শহরের মাসদাইর অক্টো অফিস এলাকার স্বপ্ন এক্সপ্রেসকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন অন্য একটি ভ্রাম্যমান আদালত। পঁচা চিংড়ি, পুটি মাছ বিক্রি এবং প্লাস্টিকজাত পণ্যে বাজারজাত করার জন্য তাদেরকে এই জরিমানা করা হয়।
ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোসাম্মৎ রহিমা আক্তার। সম্প্রতি এই আউটলেটটি উদ্বোধন করেছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ। এদিকে প্রশ্ন উঠেছে, এত সুন্দর শ্লোগানে আর চাকচিক্যময় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করে এমন প্রতারণা কীভাবে এরা করতে পারে? সচেতন মহলের মতে, হঠাৎ হঠাৎ ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালায় আর তখনই এমন অপকর্ম পাওয়া যায়। যদি এই অভিযান নিয়মিত করা হয় তাহলে, এদের আরও অসংখ্য অপকর্মের হদিস মিলতে পারে। সচেতন মহল দাবি করেছেন, ভোক্তা অধিকার আইনের পুর্ণ অধিকার ভোক্তারা যাতে ভোগ করতে পারেন এবং এদের মতো চাকচিক্যময় প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে এমন প্রতারণা আর করার দুঃসাহস দেখাতে না পারে সে জন্য নিয়মিত ভ্রাম্যমান অভিযান চালানো হোক। একই সাথে এমন অল্প স্বল্প জরিমানা না করে আরও ব্যাপক অর্থ জরিমানার ব্যবস্থা করাসহ একই অপরাধে দ্বিতীয় বার অভিযুক্ত হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।