নিউজ স্বাধীন বাংলা :কয়েক দিনের টানা বর্ষণে রূপগঞ্জ উপজেলার অন্তত ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের পথ রুদ্ধ থাকায় বৃষ্টির পানি সরতে পারছে না। ফলে কৃত্রিম বন্যার রূপ ধারণ করেছে এসব গ্রামগুলোতে। আশঙ্কা করা হচ্ছে আরও বৃষ্টি বাড়লে অন্যান্য গ্রামগুলোও পাøাবিত হতে পারে।
স্থানীয়রা বলছে, মিল-কারখানার বর্জ্য এবং মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহার্য বর্জ নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ক্যানেলের (খাল) বিভিন্ন পয়েন্টে ফেলে পানি নিষ্কাশনের পথ রূদ্ধ করে ফেলেছে। বৃষ্টির পানি সরতে পারছে না, সৃস্টি হয়েছে কৃত্রিম বন্যার।
এদিকে বৃষ্টির পানিতে গ্রামগুলো তলিয়ে যাওয়ার কারণে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। বিভিন্ন বাড়ি-ঘরেও পানি ঢুকে যাচ্ছে। কোথাও হাঁটু পানি আবার কোথাও কোমর পর্যন্ত পানি ভেঙেই চলাচল করছে ভুক্তভোগি এলাকাবাসী।
অপরদিকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে প্রায় ৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ১ কোটি ৩৭ লাখ টাকা ব্যয়ে খনন করা হয়। কিন্তু মানুষের অসচেতনতা এবং মিল মালিকরা নিয়ম না মানায় এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের ছোটবড় খালের বিভিন্ন পয়েন্ট দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় পানি নিষ্কাশনের মূল অন্তরায়। আর এ কারণে খাল খননে যে টাকা ব্যয় করা হয়েছে তা পুরোটাই জলে গেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা পরিষদ সূত্র জানায়, রূপগঞ্জ উপজেলায় ছোটবড় সব মিলিয়ে প্রায় হাজারো মিল-কারখানা রয়েছে। বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা লোকজন জমি ক্রয় করে গড়ে তুলেছেন শত শত নতুন ঘরবাড়ি। এসব মিল-কারখানার বর্জ্য চলাচলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাল ব্যবহার করা হচ্ছে। কোনো কোনো স্থানে খাল ভরাট করে পাকা, আধা পাকা স্থাপনাও নির্মাণ করেছে প্রভাবশালীরা। আর এই তারাই বেশ কয়েক বছর ধরে খালে ময়লা-আবর্জনা ও মিল-কারখানার বর্জ্য ফেলে পানি নিষ্কাশনের পথ রূদ্ধ করে ফেলায় সৃস্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে ফসলের এবং ভোগান্তিতে রয়েছে জন সাধারণ, ব্যহত হচ্ছে দৈনন্দিন কাজকর্ম।
স্থানীয়রা জানান, বিনা বাধায় খালে ময়লা আবর্জনা বেশ কয়েক বছর ধরেই ফেলা হচ্ছে। এতে করে পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। এতে ভোগান্তিতে পড়ছে ১৫ গ্রামের মানুষ।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনজুর হোসেন ভুইয়া জানান, খালগুলো দখলমুক্ত করে পানি যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে পানি সরে যাবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন জানিয়েছেন, খালগুলো দখলমুক্ত করতে প্রশাসনের দৃষ্টি রাখা প্রয়োজন। যাতে করে খালগুলো দখল বা ভরাট না হয়ে যায়।
অপরদিকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান ভুইয়া জানান, যারা ময়লা-আবর্জনা ফেলে বা বিষাক্ত বর্জ্য ফেলে খাল ভরাট করে পানি যাতায়াতে বাধার সৃষ্টি করছে এবং দখল করে রেখেছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন।