প্রেস বিজ্ঞপ্তি: প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে র্যাব-১১ জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ এর বিরুদ্ধে আপোষহীন অবস্থানে থেকে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। ২০১৮-২০১৯ বছরে র্যাব-১১ কর্তৃক বেশ কয়েকটি সফল জঙ্গিবিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এ সকল অভিযানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাসহ ১১২ জন বিভিন্ন পর্যায়ের সদস্য ও পলাতক আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। বিভিন্ন অভিযানে গ্রেফতারকৃত এ সকল জঙ্গিদেরকে বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদের নেটওয়ার্ক এবং কার্যক্রমের অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। প্রাপ্ত সে সকল তথ্যাদি যাচাই-বাছাই ও বিশ্লেষণের পর জঙ্গি কার্যক্রমে সম্পৃক্ত যে সকল সদস্য এখনও গ্রেফতার হয়নি তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য অব্যাহতভাবে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
র্যাব-১১ এর আওতাধীন এলাকায় ইতিপূর্বে দায়েরকৃত মামলা সমূহের এজাহার নামীয় পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধির পাশাপাশি বিভিন্ন স্থানে ক্রমাগত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল গত ১১ জুলাই ২০১৯ তারিখে রাত আনুমানিক ২৩০০ ঘটিকায় সিএমপি চট্টগ্রাম বন্দর থানার হালিশহর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জেএমবির ০৩ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো ১। মোঃ আশফাক-উর-রহমান অয়ন @আরিফ @ অনিক(২৬), ২। মোঃ রনি আহম্মেদ @ রনি (৩১) ও ৩। মোঃ রিপন মন্ডল@ রিপন (৩০)। এ সময় তার নিকট থেকে বিপুল পরিমাণ উগ্রবাদী বই, উগ্রবাদী লিফলেট ও ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়।
মোঃ আশফাক-উর-রহমান অয়ন @আরিফ @ অনিক এর বাড়ী নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানাধীন নরোত্তম এলাকায়। সে ২০০৯ সালে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল হতে এসএসসি (বিজ্ঞান শাখা) ও ২০১১ সালে গর্ভ সিটি কলেজ, চট্টগ্রাম হতে এইচএসসি পাশ করে এবং ২০১৬ সালে হয়রত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ¡বিদ্যালয়, সিলেট হতে অনার্স (কম্পিউটার সায়েন্স) সম্পন্ন করে। সর্ব প্রথম ২০১৪ সালে মোলা ইব্রাহীমের বক্তব্য শুনে তার মাঝে উগ্রবাদী চেতনা জাগ্রত হয় এবং মোলা ইব্রাহীমের মাধ্যমে বাংলাদেশী জিহাদী তৎপরতা ও আল কায়দা সম্পর্কে ধারনা নেয়। পরবর্তীতে সিলেটে মোলা ইব্রাহীমের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ অনুসারীর মাধ্যমে মোঃ আশফাক-উর-রহমান অয়ন @আরিফ @ অনিক আনসার-আল-ইসলামের কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ২০১৫ সালের দিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের সামরিক শাখার আইটি বিভাগের দায়িত্বে নিযুক্ত হয়। একই বছর সে ঢাকায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের একটি ১২ দিনের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহন করে গেরিলা যুদ্ধ সম্পর্কে তাত্তি¡ক ধারনা নেয়। সেখানে তার সাথে মেজর জিয়ার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা হয়। ২০১৬ সালে সিলেট থেকে ঢাকায় এসে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন আনসার-আল-ইসলামের মিডিয়া উইং এর দায়িত্ব পালন করে। মোঃ আশফাক-উর-রহমান অয়ন @আরিফ @ অনিক ২০১৭ সালে মে মাসে শুরুতে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। ২০১৭ সালের শেষের দিকে জামিনে এসে পুনরায় জঙ্গী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। ০২টি নিষিদ্ধ জঙ্গী ও উগ্রবাদী সংগঠন যথাক্রমে আনসার-আল-ইসলাম ও জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর কার্যক্রম ও আদর্শগত অভিন্নতা থাকায়, নিজের পরিচয় উৎঘাটিত হাওয়ায় এবং সাংগঠনিক বর্মকান্ডের সুবিধার্থে জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) তে যোগদানপূর্বক পূর্বের ন্যায় সামরিক শাখার আইটি বিভাগের শীর্ষ নেতা হিসেবে নিযুক্ত হয়ে জঙ্গী তৎপরতা অব্যাহত রাখে।
মোঃ রনি আহম্মেদ @ রনি (৩১) এর বাড়ী সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ থানাধীন রুদ্রপুর এলাকায় এবং মোঃ রিপন মন্ডল@ রিপন (৩০) এর বাড়ী রাজবাড়ী জেলার পাংশা থানাধীন কৃষ্টপুর এলাকায়। । তারা দুজনই দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামের ইপিজেডের দুটি বেসরকারী কোম্পানীতে চাকুরী করে। ২০১৬ সালের শুরুর দিকে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জামাআতুল মুজাহেদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর সক্রিয় সদস্য মেহেদী হাসান ও আকবর হোসেন@ সুমনের মাধ্যমে তারা উভয়ই উগ্রবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জেএমবিতে যোগদান করে এবং জঙ্গী তৎপরতায় জড়িয়ে পড়ে। মোঃ রনি আহম্মেদ @ রনি চাকুরীর পাশাপাশি জেএমবির সাংগঠনিক চালানোর সুবিধার্থে ছদ্মবেশে রাতে রিক্সা চালাতো।
রিপন র্যাব-১১ কর্তৃক দায়েরকৃত সিদ্ধিরগঞ্জ ও বন্দর থানায় সন্ত্রাস বিরোধী (জঙ্গী) দুটি পৃথক মামলার পলাতক আসামী। গোপন সূত্রে প্রাপ্ত সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল গত রাতে সিএমপি চট্টগ্রাম বন্দর থানার হালিশহর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা স্বীকার করে তারা দীর্ঘদিন যাবৎ গোপনে সংগঠিত হয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গী সংগঠন জেএমবির কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে এবং নাশকতা মূলক কর্মকান্ড করার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।