নিউজ স্বাধীন বাংলা : স্থানীয় নিউজ পোর্টাল ‘নারায়ণগঞ্জ টুডে’ এবং ‘দৈনিক যুগের চিন্তা’ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে প্রশাসনের। অভিযান চালিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় চিহ্নিত জুয়াড়ি শাজাহানের জুয়ার আসর। তবে, আসরটি বন্ধ করে দিলেও এর সাথে সংশ্লিষ্ট কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
যদিও পুলিশের দাবি, জুয়ার আসরের খবর পেয়ে তারা অভিযান চালানোর পূর্বেই সেখান থেকে কৌশলে সটকে পড়ে জুয়াড়িরা। ফলে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে, জুয়ার আসর বসানোর সাথে সংশ্লিষ্ট শাজাহান, রাজাসহ অন্যদের আইনের আওতায় আনা হবে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালছে।
সূত্র মতে, বেশ কয়েক বছর ধরে নগরীর দুটি স্থানে জমজমাট জুয়ার আসর বসিয়েছিলো একটি চক্র। তবে, আসরটি পুরো তদারকি তথা নিয়ন্ত্রণ করতেন শাজাহান। প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হতো ওই আসর দুটিতে। নেপথ্যে ছিলেন রথি মহারথিরা। যাদের বিলাসিতা, আয়েসী জীবন যাপন হতো ওই জুয়ার টাকায়।
স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রকাশ্যে ওই জুয়ার আসর দুটি চললেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো রকম অভিযান চালানো হয়নি। ধরা হয়নি জুয়া চক্রের হোতাদের। আর এ সুযোগে প্রতিদিনই নিঃস্ব হয়েছে শত শত মানুষ। হাহাকার ছিলো অনেক পরিবারে এই জুয়ার আসরকে কেন্দ্র করে। তবে, শেষতক জুয়ার আসর নিয়ে একটি ভয়েস রেকর্ড প্রকাশ পেলে নড়েচড়ে বসে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ প্রশাসন। তখন নতুন এই জেলায় যোগদান করেন পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ।
সূত্র মতে, হারুন অর রশীদ প্রকাশ হওয়া ওই ভয়েস রেকর্ড আমলে নিয়ে নগরীর বাসস্ট্যান্ড ও কালির বাজারে বøক রেইড দিয়ে অর্ধশতাধিক জুয়াড়িকে আটক করে। তবে, ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় বোর্ড নিয়ন্ত্রক শাজাহানসহ সংশ্লিষ্টরা। এরপর বেশ কয়েক মাস বন্ধ ছিলো শহরের জুয়ার আসর।
এদিকে, সম্প্রতি স্থান পরিবর্তন করে সেই শাজাহান নিতাইগঞ্জের জিমখানা এলাকায় আবারও বসায় জুয়ার আসর। চলছিলো কিছুদিন। এরমধ্যে জুয়ার বোর্ড সম্পর্কে তথ্য আসে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় নিউজ পোর্টাল নারায়ণগঞ্জ টুডে এবং দৈনিক যুগের চিন্তা পত্রিকায়। এ নিয়ে একই সাথে দুইটি গণমাধ্য সংবাদ প্রকাশ করলে টনক নড়ে প্রশাসনের। এদিন রাতেই পুলিশ অভিযান চালায় জুয়ার আসরে। তবে, সেখানে কাউকে পায়নি। পুলিশ তালা লাগিয়ে দেয় জুয়ার আসর জমানো ওই ঘরটিতে।
স্থানীয়রা বলছেন, শহরের এমন একটি জায়গাতে জুয়ার আসর বসিয়েছে যেটি ছিলো সিটি করপোরেশনের খুব কাছে। এখানে এই আসর বসানোর পিছনে মেয়র আইভী এবং পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদকে বিতর্কীত করার একটা অপচেষ্টা ছিলো। এ নিয়ে একটি পক্ষ মাঠে নামতে পারে এবং ইনিয়ে বিনিয়ে জলঘোলাও করতে পারে।
কেননা, এই চক্রটিই হচ্ছে শহরের নানা অপকর্মের সুবিধাভোগি এবং বর্তমানে এসপি হারুনের কঠোরতায় সেসব থেকে বঞ্চিত। ফলে এরা খুব কৌশল অবলম্বন করে পর্দার আড়ালে থেকে শাজাহানকে দিয়ে জুয়ার আসর বসিয়েছে কিনা তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। কেননা, শাজাহানের হাড়ির খবরটি পর্যন্ত ওই চক্রটির নখদর্পে। তাই এমন সন্দেহ উড়িয়ে দেওয়া যায় না বলেই মনে করছেন বোদ্ধা মহল।