নিউজ স্বাধীন বাংলা/ সিদ্ধিরগঞ্জ প্রতিনিধি : ব্যাংকের কাছে জমি বন্দক রেখে ৭ লাখ টাকা ঋণ গ্রহনের বিষয় গোপন রেখে বন্দকী জমি প্রতারনা করে অন্যত্র ১৫ লাখ টাকা বিক্রি করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সিদ্ধিরগঞ্জে শ্রমিকলীগ নেতা সেলিম মোল্লাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (৮ জুলাই) সকালে সিআই খোলা এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
ধৃত প্রতারক সেলিম মোল্লা পাইনাদি পূর্বপাড়ার এলাকার মোঃ ইয়ার উদ্দিনের ছেলে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, বিবাদী সেলিম মোল্লা(৪৫) ২০১৮ সালের ২৮ ফেব্রæয়ারী বাদী মোঃ মমিন আলীর স্ত্রী ও ভাবীর কাছে ১৫ লক্ষ টাকায় ৪ শতাংশ জমি বিক্রি করে। বিবাদী ওই জমি বাদী পক্ষের নামে রেজিষ্ট্রিকৃত পাওয়ার অব এ্যাটর্নী করে দেয়। কিন্তু তার আগে ২০১৪ সালের ২৬ আগষ্ট বিবাদী সেলিম মোল্লা অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশন শাখা-নারায়ণগঞ্জ থেকে ওই জমি বন্ধক রেখে ৭ লাখ টাকা ঋণ গ্রহণ করে। এ বিষয়টি জমি বিক্রির সময় ক্রয়কারীদের নিকট গোপন রাখে জমি বিক্রেতা সেলিম মোল্লা ।
এদিকে জমি ক্রেতা গত ২ জুলাই ক্রয়কৃত জমিতে বাড়ী নির্মাণের প্রস্তুতি নিলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বাঁধা দিয়ে জানায় যে, জমির মালিক সেলিম মোল্লা তপছিল বর্ণিত ওই জমি মর্গেজ রেখে ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করেন। কিন্তু ব্যাংকের কোন টাকা-পয়সা পরিশোধ না করায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩ এর ১২ ধারা বিধান মোতাবেক উক্ত তফছিল বর্ণিত সম্পত্তি নিলামে বিক্রির দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেন।
এ বিষয়টি জমি ক্রেতা সেলিম মোল্লাকে জানালে সে বিষয়টি এড়িয়ে যায়। জমি ক্রয়ের অর্থ ফেরত অথবা ব্যাংকের ঝামেলা মিমাংশার কথা বললে সেলিম মোল্লা ক্রয়কারীদের হুমকি-ধমকি দিয়ে ভয়-ভীতি প্রদান করে। নিরুপায় হয়ে জমি ক্রেতা সেলিম মোল্লার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সেলিম মোল্লা নারায়ণগঞ্জ মহানগর শ্রমিকলীগের যুগ্ন সম্পাদক। সে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় প্রতারানাসহ নানা অপকর্ম করে আসছিল। সে বহু লোকের টাকা আতœসাত করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ প্রসংগে অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ আতিকুর রহমান জানান, সেলিম মোল্লা অত্যন্ত চতুর ও প্রতারক। ২০১৪ সালের আগস্ট মাসে অগ্রণী ব্যাংক পাওয়ার ষ্টেশন শাখা থেকে নিপা এন্টারপ্রাইজ নামে ৭ লাখ টাকার বিনিময়ে সিসি হাইপো লোন করান। উক্ত ঋণের বিপরীতে আলামিন নগরের সিদ্ধিরগঞ্জ মৌজায় ৪ শতাংশ জমি ব্যাংক বরাবর মর্গেজ রাখেন। পরবর্তীতে সে ব্যাংকে নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ না করে নানান সময় নানান তালবাহানা করে আসছিল। এ ছাড়া সে ব্যাংকের সাথে প্রতারণা করে সুকৌশলে তার মর্গেজ কৃত মূল দলিল সাব রেজিষ্ট্রার অফিস থেকে সংগ্রহ করে উক্ত জমি বিক্রি করে দেয়। আমরা কিছু দিন আগে ঘটনাটি জেনে তাকে ঋণ পরিশোধ করার জন্য চাপ প্রয়োগ করলে সে কোন কর্ণপাত করেনি।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ সুত্রে জানা যায়, সেলিম মোল্লা কয়েকটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামী। সে বিভিন্ন লোকের সাথে দীর্ঘদিন যাবত প্রতারণা করে আসছে। সে বিভিন্ন সময় ক্ষমতাসীনদলের নাম ভাংঙ্গীয়ে এসব অপর্কম করছে।
এ ব্যাপারে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ডিউটি অফিসার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) কামরুজ্জামান জানায়, দুপুরে সেলিম মোল্লাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।