নিউজ স্বাধীন বাংলা : দূষণ ও দখলের কবলে পড়ে ধুঁকে ধুঁকে টিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীগুলো। এই জেলায় মোট নদীর সংখ্যা ৬ টি। এগুলোর অবস্থা খুবই করুণ। জাতীয় নদীরক্ষা কমিশনের এক প্রতিবেদনে নদী দূষণ, দখলের ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তারা দখলের বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানিয়েছে। তাদের সুপারিশ মেনে অন্যরা কাজ করবেন। তবে, এসব নদীর মধ্যে দু একটি নদী একাধিক জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত। যা একই নামে। ফলে একই নদীকে একাধিক নদী হিসেবেও দেখানো হয়েছে ওই প্রতিবেদনে।
কমিশনের প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জেলার ৬টি নদীতে ২১৬ টি বড় অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। যার বেশিরভাগই শিল্প-কারখানা। নদী কমিশন প্রতিবেদন তৈরি করতে গিয়ে হাটবাজার ও শিল্প-কারখানাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে, সাধারণ মানুষের বসতিকে এই প্রতিবেদনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। এরপরও দখলের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে কমিশনের প্রতিবেদনে। অনেক ক্ষেত্রে শিল্প মালিকরা শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন নদীর জমি দখল করে।
নদী কমিশন বলছে, তারা নিজেরা কোনও কিছুই করতে পারে না। কেবল সরকারের কাছে নিজেদের সুপারিশ জমা দিতে পারে। সরকারই জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে থাকে। তবে জেলা প্রশাসনের ১০টি কাজ থাকলে ১০ নম্বরেই রাখা হয় নদী দখল-দূষণ রোধকে। যদিও স¤প্রতি সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে নদী দখল দূষণ প্রতিরোধের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া নির্দেশ দিলে সংশ্লিষ্টরা তৎপর হন।
নারায়ণগঞ্জ জেলায় মোট নদীর সংখ্যা ৬টি। নদীগুলো হচ্ছে বুড়িগঙ্গা, ধলেশ্বরী, শীতলক্ষ্যা, মেঘনা, ব্রহ্মপুত্র ও বালু নদী। এগুলোর তীরে ২৮ টি বাজার এবং ১৮৮টি শিল্প-কারখানা রয়েছে। এস স্থাপনার অধিকাংশই নদীর তীর দখল করে নিয়েছে। এবং এসব স্থাপনার কারণে প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে নদীগুলো। কেমিক্যাল, নানা ধরণের অপঁচনশীল বর্জ্যসহ নানা উপকরণ ফেলে দূষিত করছে নদীগুলো। দখলের কারণে কোথাও কোথাও ভরাটও হচ্ছে নদী। হারাচ্ছে তার গতি প্রকৃতি।
এই বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘প্রতিবছরের মতো এবারও আমরা আবার নতুন করে প্রতিবেদন তৈরি করছি। কাজ এখন চলমান রয়েছে। শিগগিরই প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই প্রতিবেদন জমা দেওয়া সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘কোন নদী কী পরিমাণ দখলের শিকার, কী কী পদক্ষেপ নিয়ে নদী দখলমুক্ত করা যাবে এবং এ পর্যন্ত কী কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা উল্লেখ করা হবে।’
মুজিবর রহমান হাওলাদার আরও বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের কাছে কমিশনের পক্ষ থেকে ডিও লেটার দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক জেলা নদী কমিশনের কমিটির সঙ্গে বসে তার এলাকায় কী কী নদী আছে, এসব নদীর পাশে কী কী ধরনের অবৈধ স্থাপনা আছে, আর এসব স্থাপনা উচ্ছেদে কী ধরনের উদ্যোগ নেওয়া দরকার, সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দেবে।’